পাহাড়ে আমের মুকুল-চাষীদের মুখে হাসি


admin প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫, ৯:১৬ অপরাহ্ন /
পাহাড়ে আমের মুকুল-চাষীদের মুখে হাসি

 

আরিফুল ইসলাম মহিন: খাগড়াছড়ির পাহাড়ি বন ও বসতবাড়ির আম গাছে সবুজ পাতার ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। বসন্তের আগমনী বার্তায় প্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজেছে। শীতের বিদায় লগ্নে মুকুল জানান দিচ্ছে নতুন ঋতুর আগমন। চাষিরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পরিচর্যায়, ভালো ফলনের আশায় তারা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের আম চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও এর চাহিদা বেড়েছে। মাঘ মাসের শুরুতেই বিভিন্ন বাগানে মুকুল আসতে শুরু করেছে, যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। চাষিরা বলছেন, আমের মুকুলের সুবাসে চারপাশ মাতোয়ারা হয়ে উঠবে, তবে ভালো ফলন পেতে হলে যত্ন নেওয়া জরুরি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন বাগানে ইতোমধ্যে আমের মুকুল দেখা যাচ্ছে। গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে সোনালি সম্ভাবনা। আম চাষি রূপময় চাকমা জানান, তার ১২০ শতাংশ জমির বাগানে রূপালী, বারি-৮, থ্রি টেস্ট, বারি-১১সহ বিভিন্ন জাতের আম রয়েছে। কলম করা গাছ হওয়ায় দ্রুত ফলন দিচ্ছে, যা আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো উৎপাদনের আশা জাগিয়েছে।

শুধু বাণিজ্যিক বাগান নয়, বাড়ির আঙিনার আম গাছেও মুকুল দেখা যাচ্ছে। আম মৌসুমি অর্থকরী ফল হলেও এখন শিল্পজাত পণ্য হিসেবেও ব্যাপকভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক পরিবেশ আম চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এর উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে।

স্থানীয় আম চাষি থৈলাও মগ জানান, মুকুল আসার পর গাছের যত্ন নেওয়া জরুরি। পরিচর্যার পাশাপাশি আগাছা পরিষ্কার ও কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে, যাতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ঠেকানো যায়।

তবে, আবহাওয়ার প্রতিকূলতা নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত অনেক চাষি। বিশেষ করে মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া মুকুলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এতে গাছে রোগের আক্রমণ দেখা দিতে পারে, যা ফলনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রাব্বি হাসান জানান, আমের মুকুল ভালো রাখতে প্রাকৃতিক পরাগায়নের জন্য মৌমাছি পালন এবং বাগানের চারপাশে ফলজ গাছ রোপণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির বাগান ও বসতবাড়িতে আমের মুকুলের সুবাস ছড়াতে শুরু করেছে। চাষিরা আশাবাদী, পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও ভালো ফলন পাবেন, যা স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও সরবরাহ করা সম্ভব হবে।