হালিমা আক্তার : বঙ্গবন্ধু টানেল আদলে পারিবারিক পুষ্টি বাগান করে এলাকায় সাড়া ফেলেছে কৃষক মো. দেলোয়ার হোসেন। সংশ্লিষ্ট ব্লকের কৃষি উপ সহকারী নুর মোহাম্মদের অনুপ্রেরণা ও সার্বিক সহযোগিতায় টানেল পদ্ধতিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান করেছে বলে জানান কৃষক দেলোয়ার। খাগড়াছড়িতে প্রথম বারের মত এ পদ্ধতিতে পুষ্টি বাগান করায় এর নয়নাভিরাম দৃশ্য এক নজর দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এটা শুধু সবজি বাগান নয়, সম্প্রতি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এতে টানেল পদ্ধতিতে সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের ।
সরজমিনে দেখা যায়,টানেল আকৃতিতে বাঁশ দিয়ে পাহাড়ের উপর মনের মাধুরী মিশিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেলের আদলে তৈরী করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেল সিস্টেমের পারিবারিক পুষ্টি বাগান। মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়ি তুলাতলী গ্রামে কৃষক দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে প্রবেশ পথে তৈরী করা হয় এই টানেল সিস্টেম। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ১০ফুট প্রস্থ বাড়ির প্রবেশ পথের দুই ধারে সারি বদ্ধ ভাবে ৫ ফুট দূরত্বে ৭ফুট উচু বাশেঁর খুঁটি দিয়ে বাঁশের তৈরী মাচায় খুঁটির উপর দুই দিকে বাঁকা করে ৩ ফুট দূরত্বে ২/৩ ফুট উঁচু রেক্সিন দিয়ে শক্ত করে বাধা হয়। এর উপর থেকে নেট দিয়ে আবৃত করে দুই পাশে মাটি থেকে ১ফুট উপরে খুঁটির সাথে বেঁধে দেয়া হয়।
আধুনিক কৃষি পদ্ধতি অনুস্মরণ করে মাটিতে রোপন করা লতা জাতীয় ,শষা, লাউ, শিম,চিচিঙ্গা,বরবটি ,ধুনধল সবজি গাছ সহজেই মাটি থেকে নেটে জড়িয়ে টানেলের উপর উঠে। এতে তৈরী হয় টানেল সিস্টেম পুষ্টি বাগান। দেখতে যা অনেকটা বঙ্গবন্ধু টানেলের মত। আর এই কারণে এর নাম করণ করা হয় বঙ্গবন্ধু টানেল সিস্টেম পুষ্টি বাগান। টানেলের উপরি ভাগ ও দুই পাশে হালকা বাতাসে ফুলের ঢেউ খেলানো মনমাতানো দৃশ্য চোখ জুড়ায়। মাচার ফাঁকে ফল গুলো নিচের দিকে নেমে আসে। দেখতে খুব চমৎকার।
এছাড়াও টানেল সিস্টেমকে আরো সুন্দর ও আকর্ষনীয় করতে দুই পাশে ভূট্রা , তরমুজ ও সূুর্যমুখি ফুলের গাছ রোপন করা হয়েছে। সবুজ ভূট্টা ও হলদে সূর্যমুখীর গোড়া জড়িয়ে বপনকৃত তরমুজ লতার পাতা আগলিয়ে রাখে মাটির রস। সূর্যের তাপ সরাসরি মাটি হতে রস শোষন করতে পারেনা বিধায় সেচ লাগে কম। একি সাথে পরিকল্পিত ভাবে চাষাবাদে পরিচর্চা কীটনাশকও লাগে কম।
কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, কৃষি উপসহকারী নুর মোহাম্মদ এর অনুপ্রেরণা ও সার্বিক সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু টানেল সিস্টেম পারিবারিক পুষ্টি বাগান করা হয়েছে। এতে প্রায় সর্বমোট খরচ হয়েছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এটা শুধু সবজি বাগান নয়, বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করা যাবে বলে জানান তিনি। পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে দেখতে আসা কৃষক শাহ ফরান জানান,দেলোয়ার বাড়িতে একটি টানেল সিস্টেম সবজি বাগান হয়েছে শুনে দেখতে এসেছি। সবজি বাগানটি দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। বঙ্গবন্ধু টানেল সিস্টেম সবজি বাগান করতে কৃষি অফিসের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :