মানিকছড়ি, প্রতিনিধি,
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত তবলাপাড়া এলাকায় ২০১৮ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় “তবলাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়”। মাত্র ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করা এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭০ জন, এবং নতুন বছরে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বিদ্যালয়টি মানিকছড়ি উপজেলার অন্তর্ভুক্ত হলেও পার্শ্ববর্তী গুইমারা ও রামগড় উপজেলার সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত। এর ফলে বিদ্যালয়টি সরকারি-বেসরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
সোমবার দুপুরে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফকাত আলী বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যান। বাঁশ, কাঠ ও টিনশেডে গঠিত বিদ্যালয়টি এবং শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখে তারা মুগ্ধ হন।
বিদ্যালয়ে কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তার এটাই প্রথম পরিদর্শন। ইউএনও এবং তার সঙ্গীদের আগমনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আনন্দিত হন। পরিদর্শনের সময় বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো, আসবাবপত্র এবং অন্যান্য সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়। ইউএনও তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া এসব সমস্যার সমাধানে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
পরিদর্শনের সময় ইউএনও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি বাইসাইকেল উপহার দেন এবং অভিভাবকদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। তিনি বলেন, “শিক্ষার আলো কেবল সদর এলাকায় নয়, প্রত্যন্ত এলাকাতেও ছড়িয়ে দিতে হবে। অনগ্রসর জনপদে শিক্ষার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে প্রশাসন সব সময় পাশে থাকবে।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিনুবাই মারমা জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে চারজন শিক্ষক স্বল্প বেতনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে মাসিক বেতন সময়মতো দেওয়া সম্ভব হয় না। এছাড়া, ছয় বছরে এই প্রথম কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিদ্যালয় পরিদর্শনে এলেন। তাদের উপস্থিতি সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মংসাপ্রু চৌধুরী বলেন, “শিক্ষকদের বেতন স্থানীয়দের সহায়তায় প্রদান করা হয়, যা নিয়মিত পরিশোধ সম্ভব হয় না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও সামান্য বেতন আদায় করা হয়, যা বেশিরভাগ অভিভাবক পরিশোধ করতে পারেন না।” তিনি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধানে উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও পার্বত্য জেলা পরিষদের সহযোগিতা কামনা করেন।
এই প্রথম পরিদর্শন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক করেছে এবং স্থানীয়রা তাদের সমস্যার সমাধানে আশাবাদী হয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :