ডেস্ক রিপোর্টঃ
আজ, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাথে মিলিত হয়ে বড় দিন উদযাপন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯৭ পদাতিক ব্রিগেড। এই বিশেষ উদযাপনটি রুমা বাজারের ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান চার্চে অনুষ্ঠিত হয়, যা এই অঞ্চলের প্রধান চার্চ। আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা গির্জায় উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মিলিত হয়ে বড়দিনের আনন্দ ভাগাভাগি করেন এবং তাদের প্রতি শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানিয়ে কেক ও মিষ্টি বিতরণ করেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানানোর সময় উপস্থিত সবার সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে এই বিশেষ দিনে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করা হয়। ৯৭ পদাতিক ব্রিগেড এর পক্ষ থেকে ইভানজেক্যিাল চার্চের পাশাপাশি রুমা উপজেলার রনিপাড়া, ক্যাপলং পাড়া, সুংসুং পাড়া ও বগালেক পাড়ার দুর্গম চার্চ গুলোতেও কেক ও মিষ্টি প্রেরণ করা হয়।
খ্রিষ্টান সম্প্রদায় বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যারা বড়দিন অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপন করে। বড়দিন শুধু খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নয়, বরং স্থানীয় সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির সেতুবন্ধন তৈরি করে। স্থানীয় জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতিশ্রতিকে আরও ত্বরান্বিত করতে ৯৭ পদাতিক ব্রিগেডের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ৯৭ পদাতিক ব্রিগেড এর ডিএএন্ডকিউএমজি, মেজর শোভন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্যাপ্টেন কাজী ইনভিসার সালিম, জিএসও-৩ (অপস), সদর দপ্তর ৯৭ পদাতিক ব্রিগেড, রুমা ইভানজেলিক্যাল চার্চ এর ফাদার, চার্চ কমিটির সদস্য, বিভিন্ন এলাকার কার্বারী, গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গসহ রুমা বাজারে অবস্থিত সকল খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, মেজর শোভন কবির, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে তার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে জাতির সার্বিক উন্নয়ন ও শান্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই উৎসবটি একসঙ্গে উদযাপন করার মাধ্যমে, আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং এই অঞ্চলের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশ্বাস ও বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে চাই। এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বড়দিনের মত বিশেষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐঐতিহ্যের মূল্যায়ন এবং জনগনের মধ্যে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা আরও ত্বরান্বিত করার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের দেশের গর্ব। অন্যান্য সকল সম্প্রদায়ের জনগণ খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের শুভ বড়দিন ও নববর্ষ উদযাপনে আন্তরিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করবে এবং সকলেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থেকে কাধে কাঁধ মিলিয়ে সুখী, সমৃদ্ধশালী ও উন্নত দেশ গঠনে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ভবিষ্যতেও এমন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন, যাতে দেশের প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি পায়।
রুমা উপজেলায় অবস্থিত খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বড়দিন উদযাপনের এই উদ্যোগ জাতীয় সম্প্রীতি ও উন্নয়নের প্রতি তাদের অবিচল প্রতিশ্রুতিকে প্রদর্শন করে। এমন অর্থবহ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সেনাবাহিনী বিশ্বাস ও সহযোগিতার ভিত্তি আরও ত্বরান্বিত করে এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর।
আপনার মতামত লিখুন :