খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক : খাগড়াছড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশে “চারি মহাতীর্থ ভ্রমণ” নামক ভ্রমণ কাহিনীর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বইটি যৌথভাবে লিখেছেন খাগড়াছড়ি জেলার প্রাক্তন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাধন কুমার চাকমা এবং লেখক ও গবেষক দেবপ্রিয় চাকমা।
৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের পানখাইয়া পাড়ায় এক জমকালো আয়োজনে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য নিটোল মনি চাকমা। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রফেসর বৌধিসত্ব দেওয়ান, জেলা পরিষদের সদস্য জয়া ত্রিপুরা, এবং অন্যান্য লেখক ও গবেষকগণ।
সাধন কুমার চাকমা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলার কামাকুছড়া গ্রামে ২০ আগস্ট ১৯৬১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কৃষক পরিবারে জন্ম নেয়া এই লেখক গ্রামের পাঠশালায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং পরে দীঘিনালা প্রাইমারি স্কুল ও দীঘিনালা হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন।
এরপর তিনি:
কর্মজীবনে তিনি দীঘিনালার বড়াদম হাই স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং ২০১৬ সালে সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা অফিসে যোগ দেন। পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট অবসর গ্রহণ করেন।
ব্যক্তিগত জীবন:
তিনি এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তার কন্যা বর্তমানে এডিসি, জামাতা অতিরিক্ত এসপি এবং পুত্র বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত। তার স্ত্রী প্রণতি খীসা একজন গৃহিণী। অবসরের পর তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও লেখালেখির কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন।
দেবপ্রিয় চাকমা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার চেঙ্গী ভেলী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শরণার্থী শিশু হিসেবে ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার করবুক শরণার্থী শিবিরে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন।
তিনি:
বর্তমানে তিনি একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত এবং পাশাপাশি লেখালেখি ও সাহিত্য-সংস্কৃতি সংগঠক হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি “চাঙমা সাহিত্য বাহ” নামে পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহত্তম সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি তিনি বন্ধুদের নিয়ে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন, যা ১৪ হাজার জনকে চাকমা বর্ণমালার প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে।
তিনি নয়টি গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ চাকমা ভাষায় অনুবাদ করেছেন। “চারি মহাতীর্থ ভ্রমণ” বইটির সহ-লেখক হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
“চারি মহাতীর্থ ভ্রমণ” বইটি বৌদ্ধ তীর্থস্থান নিয়ে লেখা একটি অনন্য ভ্রমণ কাহিনী, যা পাঠকদের ধর্মীয় ও ঐতিহ্যগত জ্ঞান সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করবে। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এই বইটি পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আপনার মতামত লিখুন :