প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ময়ুরখীল গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে খোকন মজুমদার (৪০) গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশ জানায়, খোকন তার বাবা বিনোদ মজুমদারকে (৬৯) রড দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
২০ জানুয়ারি রাতে পিতা-পুত্রের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে বাবা বিনোদ মজুমদার ছেলেকে রড দিয়ে আঘাত করলে খোকন পাল্টা আঘাতে তাকে মারাত্মকভাবে জখম করে। ঘটনার পর খোকন বিষয়টিকে সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল।
পরবর্তীতে, খোকন তার বাবাকে প্রথমে মানিকছড়ি হাসপাতালে এবং পরে চট্টগ্রামের চ.মে.ক হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তার শরীরের আঘাত দেখে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে করেন। তদন্তে পুলিশের কাছে হত্যার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রডটি ঘটনাস্থলের পাশের বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খোকন হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
নিহতের স্ত্রী রিনা মজুমদার ২২ জানুয়ারি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে খোকন মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে খোকন হত্যার দায় স্বীকার করেছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।”
স্থানীয় জনগণ ও প্রতিবেশীরা ঘটনাটি মর্মান্তিক বলে উল্লেখ করেছেন। তারা মনে করেন, পারিবারিক কলহের কারণে এমন নির্মম ঘটনা পুরো সমাজকে নাড়া দিয়েছে।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, খোকনের আচরণে তারা আগে থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন, তবে কখনও ভাবেননি যে সে এমন ভয়াবহ কাজ করতে পারে। তারা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছেন।
পুলিশ বলছে, পারিবারিক কলহজনিত অপরাধ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে স্থানীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা কার্যক্রম চালু করা জরুরি।
এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে এলাকাবাসী শোকাহত হলেও তারা পুলিশের কার্যকর তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের জন্য আশাবাদী।
আপনার মতামত লিখুন :