সবুজ পাতার ডেস্ক : খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে খাগড়াছড়িতে মতবিনিময় সভা করেছেন অন্তবরতী সরকারের তিন উপদেষ্টা।
‘‘খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে ঘটে যাওয়া সহিংতা তদন্তে শীঘ্রই একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে, যা আগামীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। ২১শে সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল(অবঃ) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, কিছু দুস্কৃতিকারীর উসকানিতে পাহাড়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর অপচেষ্টা করছে তারা। গুজবে কান দিয়ে কেউ যেন নিজের হাতে আইন তুলে না নেয় সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আঘাত করা হলে তা কোনভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা এবং যারা আহত হয়েছে তাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। পাহাড়ে সম্প্রীতি বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্র করলে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
সভায় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান বলেন, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে পরিকল্পিতভাবে বড় সহিংতায় রূপান্তর করা হয়েছে। কেউ চুরি করলে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা অনেক বড় অপরাধ। তবে যাই ঘটুক না কেন, পাহাড়ে সকল সম্প্রদায় যেন একসাথে একই ছাতার নিচে থাকতে পারে সেই বিষয়ে পাহাড়ি-বাঙালি সবাইকে সহনশীল হতে হবে’’।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, উসকানি ও গুজবের ফাঁদে পা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের চেতনা যেন ম্লান না হয়। এ জন্য পাহাড়ি-বাঙালি সবাইকে ভ্রাতৃত্বসূলভ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে’’।
সভায় পুলিশ মহা-পরিদর্শক(আইজিপি) মো: ময়নুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ২৪পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো: মাইনুর রহমান, ২০৩ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মোহাম্মক আমান হাসান, জেলা প্রশাসক মো: শহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েলসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত সভায় মং সার্কেল চীফ রাজা সাচিংপ্রুু চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভুইয়া, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জাহিদ হাসান, মারমা ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা মংশ্যে মারমা, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি সুশীল জীবন ত্রিপুরা, প্রেস ক্লাবের সভাপতি তরুন কুমার ভট্টাচার্য্য প্রমূখ বক্তব্য দেন ।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দ প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্প পূন:স্থাপন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চাঁদাবাজ ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কঠোর হস্তে দমন, উসকানীমূলক বক্তব্য বা গুজবে কান না দেওয়া, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকসহ সকল ক্ষেত্রে সকল সম্প্রদায়ের সমান অধিকার ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে পাহাড়ী-বাঙ্গালী সহাবস্থান নিশ্চিত করনে বর্তমান সরকারের প্রতি উদাত্ব আহবান জানান।
আপনার মতামত লিখুন :