মোবাইল টাওয়ার এ ইউপিডিএফ এর সিরিজ হামলা, চাঁদা না দেয়ায় পাহাড়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন, লাখো মানুষ বিপদে।


admin প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২৩, ২০২৫, ১০:৩২ অপরাহ্ন /
মোবাইল টাওয়ার এ ইউপিডিএফ এর সিরিজ হামলা, চাঁদা না দেয়ায় পাহাড়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন, লাখো মানুষ বিপদে।

ডেস্ক রিপোর্টঃ

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নতুন করে এক আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ। ২২ জানুয়ারি ভোররাতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনটি রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার বেশকিছু মোবাইল টাওয়ার এর নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন কেটে দিয়ে লাখো মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ফলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং বিপাকে পড়েছে সাধারণ জনগণ।

 

স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে জানা যায়, সম্প্রতি ইউপিডিএফ সংগঠনটি মোবাইল টাওয়ার অপারেটরদের কাছে বিপুল পরিমাণ চাঁদা দাবি করেছে। অপারেটররা চাঁদা পরিশোধে অস্বীকৃতি জানালে সংগঠনটি পার্বত্য অঞ্চলের ১০টি মোবাইল টাওয়ারে হামলা চালিয়ে নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়া সহ টাওয়ার অফিস ও সার্ভার রুম ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এর মধ্যে ৬টি টাওয়ার খাগড়াছড়ি জেলায় এবং ৪টি রাঙামাটি জেলায়। উপজেলা গুলো হলো- দীঘিনালা, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা এ নানিয়ারচর।

 

এসব এলাকার লাখো মানুষ এই মুহূর্তে একেবারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ও নিরাপত্তা সংকট তৈরী হয়েছে। টাওয়ার টেকনিশিয়ানরা জানিয়েছেন এই ক্ষতি পূরণ যথেষ্ট সময় ও অর্থ সাপেক্ষ হওয়ায় এই এলাকাগুলোর জনগণকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য নেটওয়ার্ক বিহীন অবস্থায় থাকতে হতে পারে। তার ওপর ইউপিডিএফ এর হুমকি তো রয়েছেই।

 

ইউপিডিএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি চাঁদা পরিশোধ না করা হয়, তবে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য এলাকায়ও একই ধরনের কার্যক্রম চালাবে। এই ধরনের হুমকি এবং অব্যাহত চাঁদাবাজি মোবাইল টাওয়ার কোম্পানির কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

এদিকে এই পরিস্থিতির ফলে শুধু মোবাইল সেবা নয়, পুরো এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং প্রশাসনিক কাজকর্মে ব্যাপক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই জরুরি ফোন কল করতে পারছেন না, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

 

দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ে এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চললেও, এর প্রতিকার এখনও কার্যকরভাবে নেওয়া হয়নি। পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষদের অনেকেই এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চায়। তবে, প্রতিরোধের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যতটা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, ততটা দৃশ্যমান নয়। ইউপিডিএফের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি রাজনৈতিক সংকটের সুযোগ নিয়ে নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে এবং স্থানীয় জনগণের উপর ভয় দেখিয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে। স্থানীয়রা আশা করেন, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান হবে, এবং পাহাড়ে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।