স্থানীয় প্রতিনিধিঃ
১৩ মার্চ ২০২৫ (বৃহস্পতিবার): গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার দুর্গম ডাংকু পাড়া এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বিশেষ অভিযানে সেনাবাহিনী দুপুর ১৪৩০ ঘটিকায় ডাংকু পাড়া এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একটি গোপন আস্তানা ঘেরাও করতঃ তল্লাশি অভিযান শুরু করে। অভিযান চলাকালীন সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করলে সেনাবাহিনীর সাথে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন দিক থেকে পালানোর চেষ্টা করলেও সেনাবাহিনী তাদের কৌশলে ঘিরে ফেলে এবং অভিযান পরিচালনা করে। সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, গুলি বিনিময়ের পর সন্ত্রাসীদের আস্তানাটি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। অভিযান শেষে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ০৮ টি গাদা বন্দুক, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, ০২ টি ওয়াকি টকি সেট, ০১ টি বার্মিজ ছুরিসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ০২ জন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়, যারা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
সেনাবাহিনীর সূত্র মতে, সন্ত্রাসীদের এই আস্তানাটি দীর্ঘদিন ধরে অপতৎপরতার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এখান থেকে পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের গতিবিধির উপর নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং এই গোপন আস্তানার সন্ধান পাওয়ার পরই অভিযান পরিচালনা করে। এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সেনাবাহিনীর এই অভিযানের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের উপর বড় ধরনের আঘাত হানা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অপতৎপরতা বন্ধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
স্থানীয় জনগণের মতে, সম্প্রতি এই এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়ে গিয়েছিল এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। সেনাবাহিনীর এ অভিযানের ফলে এলাকাবাসী কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে তাদের এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস দমনে সেনাবাহিনীর তৎপরতা চলমান থাকবে এবং দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও পরিচালিত হবে বলে জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :