প্রতিনিধি: একসময় মিষ্টি পানের জন্য খ্যাত খাগড়াছড়ির পানছড়ি এখন পাহাড়ি জমিতে কফি চাষের মাধ্যমে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আম, লিচু, মালটা, কাজুবাদাম এবং আনারসের পাশাপাশি পাহাড়ের পতিত জমিতে এখন স্থানীয় কৃষকরা কফি চাষেও এগিয়ে আসছেন।
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে কফি গাছে সাদা ফুল ফুটে পাহাড়ি অঞ্চলে মনোরম সুগন্ধ ছড়ায়। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে কফি ফল সংগ্রহ শুরু হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পানছড়ি উপজেলার ১৫০ একর জমিতে ২৮০ জন কৃষক কফি চাষ করেছেন। প্রতি ২৫ জন চাষির জন্য একটি করে পাল্পিং মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে।
কফি চাষি আবৃতি চাকমা, রেশমা ত্রিপুরা এবং ননি ত্রিপুরা জানান, তিন বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে চারা রোপণ করেন তারা। এখন গাছগুলো থেকে ভালো ফলন পাচ্ছেন।
প্রাথমিকভাবে হেক্টরপ্রতি বাগান তৈরিতে ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। সেচ ও অন্যান্য ব্যয় কম হওয়ায় এবং রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কম থাকায় কৃষকরা কফি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। প্রতি ৬ কেজি কফি ফল থেকে ১ কেজি শাঁসযুক্ত কফি বিন এবং তা থেকে প্রায় ৭৫০ গ্রাম ফ্রেশ কফি বিন উৎপাদন করা যায়। এক একর জমিতে বছরে ১ থেকে ১.৫ লাখ টাকা লাভ সম্ভব।
উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুণাঙ্কর চাকমা জানান, কফি গাছ লাগানোর দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ফল দেয়। অর্থকরী এই ফসল দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার নাজমুল ইসলাম মজুমদার বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে রোবাস্টা কফি জাত বেশি জনপ্রিয়। কফি চাষ স্থানীয় অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে।
চাষিরা স্থানীয় বাজারে কফি বিন বিক্রি করছেন। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে আগামীতে ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরকারি সহায়তা এবং আধুনিক প্রযুক্তির ফলে কফি চাষ এখন স্থানীয় কৃষকদের জীবিকা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
আপনার মতামত লিখুন :