মো. সোহেল রানা : “কৃষিই সমৃদ্ধি” প্রতিপাদ্য ধারণ করে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উফশী বোরো ধানের ৫০ একর জমিতে ব্লক প্রদর্শনীতে সমলয় পদ্ধতিতে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।
বোয়ালখালী ইউনিয়নের তেবাংছড়া এলাকার কাটারুং ব্লকে এই কর্মসূচির আওতায় ৫০ জন কৃষকের মাঝে ৫০ একর জমিতে উচ্চফলনশীল উফশী বোরো ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। কৃষকরা একসঙ্গে সমলয় পদ্ধতিতে চারা রোপণ করেছেন এবং একইসঙ্গে ধান কাটা ও মাড়াই করবেন।
তেবাংছড়া ক্লাস্টারের সমলয় চাষিদের সভাপতি প্রনেশ চাকমা বলেন, “বর্তমানে ধান রোপণের জন্য শ্রমিক পাওয়া যায় না এবং খরচও বেশি। এককানি (৪০ শতক) জমিতে ধান রোপণে ৫,০০০ টাকা খরচ হয়। তবে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন ব্যবহারে খরচ কমে গেছে। মাত্র ৩০-৪০ মিনিটে এককানি জমিতে চারা রোপণ করা সম্ভব হচ্ছে। সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি এবং আশানুরূপ ফল পাব বলে আশা করছি।”
একজন কৃষক জানান, তেবাংছড়া গ্রামে এই প্রথমবারের মতো মেশিনের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। এটি কৃষকদের জন্য অত্যন্ত উপকারী প্রমাণিত হয়েছে। শ্রমিক সংকট এবং উচ্চ মজুরির কারণে কৃষকদের ভোগান্তি হচ্ছিল। মেশিন ব্যবহারে অর্ধেকেরও বেশি খরচ সাশ্রয় হয়েছে। তিনি আরও জানান, সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে তেবাংছড়া কৃষক সমিতির জন্য রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন ক্রয় করা সম্ভব হলে আরও বেশি উপকৃত হওয়া যাবে।
দীঘিনালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, “এই প্রথমবার দীঘিনালা উপজেলায় তেবাংছড়া ব্লকের ৫০ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রথমে রাইস ট্রেতে চারা উৎপাদন করা হয় এবং পরে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। এতে বিঘা প্রতি চারা রোপণে মাত্র ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগছে এবং শ্রমিক খরচ ৪-৫ হাজার টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রণোদনার আওতায় কাটারুং ব্লকের কৃষকদের ধান চাষে চারা, সার, কীটনাশক প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণ এবং কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে পাকা ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই করা হবে।”
কৃষি বিভাগ এবং সমলয় পদ্ধতির এ উদ্যোগ স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এটি উৎপাদন খরচ কমানো এবং ধানের ফলন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। স্থানীয় কৃষকরা এ কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং সরকারের এমন উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :