প্রতিনিধি:
শাহানা ও আবদুল হামিদ একই পরিবারের ভাই-বোন। দেখতে শিশু মনে হলেও, শাহানার বয়স ছাব্বিশ এবং হামিদের বয়স একুশ। তবে শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অভাবে তারা আজও মায়ের কোলে ভর করে চলাফেরা করেন। শাহানা অল্পস্বল্প চলাফেরা করতে পারলেও হামিদ সম্পূর্ণভাবে মায়ের ওপর নির্ভরশীল।
পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র (দাখিল) মাদ্রাসার পাশেই তাঁদের বাড়ি। বাবা আবদুল আলী ও মা হামিদা বেগম সুস্থ স্বাভাবিক হলেও তাঁদের দুই সন্তান জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। হামিদ মায়ের কোলে চড়ে পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষা পাশ করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে তাদের স্বপ্ন ছিল একটি হুইল চেয়ারের, যা দিয়ে বাড়ির আশপাশে একটু চলাফেরা করতে পারবেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে এই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। অবশেষে পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) লোগাং জোন তাদের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসে। জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির আওতায় তাদের বাবা আবদুল আলীর হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি মানসম্পন্ন হুইল চেয়ার।
হুইল চেয়ারটি প্রদান করেন পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) লোগাং জোনের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মফিজুর রহমান ভূঁইয়া। এটি পেয়ে দুই ভাই-বোন এবং তাঁদের পরিবারের আনন্দ যেন সীমাহীন হয়ে ওঠে।
হুইল চেয়ারে বসে হামিদ মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ায়, আর মা হামিদা হয়ে যান তার চালক। বাড়ির ছোট্ট আঙিনায়, বাঁশঝাড়ের নিচে ভাই-বোনের এই চলাফেরা যেন পরিবারে নতুন জীবনের বার্তা বয়ে আনে।
শাহানা ও হামিদের মা হামিদা বেগম বিজিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমার সন্তানদের জন্য হুইল চেয়ার দেওয়ায় আমরা খুব খুশি। বাচ্চারা এতে চড়তে পেরে অনেক আনন্দ পাচ্ছে। বিজিবির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”
প্রতিবেশীদের প্রতিক্রিয়া:
প্রতিবেশী মো. মানিক বলেন, “বিজিবি থেকে হুইল চেয়ারটি দেওয়ার কারণে আমরা এলাকাবাসী খুব খুশি। অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিজিবিকে ধন্যবাদ।”
বাজার উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম বলেন, “প্রতিবন্ধী পরিবারটি আমার বাড়ির পাশেই। তাঁদের মা অনেক কষ্ট করে সন্তানদের লালন-পালন করেছেন। বিজিবি হুইল চেয়ার দেওয়ায় তাঁর কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়েছে। এ উদ্যোগের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”
এ ধরনের উদ্যোগ স্থানীয়দের সহযোগিতার পাশাপাশি অসহায় পরিবারগুলোর জীবনে আশার আলো বয়ে আনে। পরিবারটি এখন আরও সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।
আপনার মতামত লিখুন :