প্রতিনিধি।। কয়েকদিন আগেও ভাঙাচোরা ঝুপড়ি ঘরে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছিল খাগড়াছড়ি সদরের পেরাছড়া ইউনিয়নের বেলতলী খামারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ৭৩ বছর বয়সী বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও ৭০ বছর বয়সী প্রভাতী বালা ত্রিপুরা দম্পতিকে। বাঁশ ও পলিথিনের তৈরি ছোট একটি ঝুপড়ি ছিল তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। শীতের সময় ঠান্ডা বাতাস আর কুয়াশা, বর্ষায় বৃষ্টি—সব মিলিয়ে প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেই চলছিল তাদের জীবনসংগ্রাম।
এই মানবেতর অবস্থার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মোঃ আমান হাসান সরাসরি বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি পরিদর্শন করেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন এবং তাদের জমি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করে নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) খাগড়াছড়ি রিজিয়নের অর্থায়নে ও খাগড়াছড়ি সদর জোনের তত্ত্বাবধানে নির্মিত একটি টিনশেড ঘর বৃদ্ধ দম্পতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলাম নতুন ঘর ও ডেউটিন উপহার হিসেবে তাদের হাতে তুলে দেন।
এর আগে, গত ২৭ জানুয়ারি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মোঃ আমান হাসান, জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা সরেজমিনে গিয়ে বৃদ্ধ দম্পতির দুঃখ-দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই জমি-সংক্রান্ত জটিলতা সমাধান করে রান্নাঘর, ওয়াশরুমসহ নতুন ঘর নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়।
এছাড়া, একই দিনে চেলাছড়া পাড়ার বিধবা ও অসহায় সাবানা ত্রিপুরাকে নগদ ১০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।
নতুন ঘর হস্তান্তরকালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলাম বলেন, “রিজিয়ন ও জোন কর্তৃক এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই একসঙ্গে থাকব এবং একে অপরকে সহায়তা করব। এই জেলার সকল সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য আমরা সর্বদা পাশে থাকব।”
অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের ভারপ্রাপ্ত স্টাফ অফিসার ক্যাপ্টেন মোঃ মাজহারুল ইসলাম, কার্বারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রনিক ত্রিপুরাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :