সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে রাঙামাটিতে জাতীয় কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপন


admin প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১২, ২০২৫, ৮:৫৪ অপরাহ্ন /
সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে রাঙামাটিতে জাতীয় কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপন

 

জসীম উদ্দিন জয়নাল : “সরকার সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল এবং ধর্মীয় উৎসবগুলো নির্বিঘ্নে পালনের জন্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে,” বলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা।
১১ অক্টোবর শনিবার বিকেলে রাঙামাটি শহরের মোনঘর রাঙ্গাপানি মিলন বিহার প্রাঙ্গণে জাতীয় কঠিন চীবর দানোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “এই উৎসব শুধু ধর্মীয় নয়, এটি পাহাড় ও সমতলের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির সেতুবন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। শান্তি, সহাবস্থান ও গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেয় এ আয়োজন।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্রের ভিত্তি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সরকার একটি অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে জনগণ তাদের ভোটাধিকার নির্বিঘ্নে প্রয়োগ করতে পারে।” অনুষ্ঠানে প্রার্থনা, আকাশ প্রদীপ দানোৎসর্গ, পঞ্চশীল পাঠ ও দেশ-জাতির কল্যাণ কামনায় মৈত্রী সূত্র পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। উপদেষ্টা বলেন, “জাতীয় কঠিন চীবর দানোৎসব পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতীক হয়ে উঠবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই বন্ধন কোনোভাবেই ভাঙা যাবে না।”
ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন জানান, “বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঢাকার উত্তরায় একটি শ্মশান নির্মাণ করা হয়েছে এবং পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক মানের বৌদ্ধ বিহার ও কল্যাণ ট্রাস্ট ভবন নির্মাণের জন্য ২১ কাঠা জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে সহায়তার অংশ হিসেবে সরকার ২ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে।”
উৎসবে সারাদেশ থেকে তিন শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু অংশ নেন। কক্সবাজার, টেকনাফ, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, কুমিল্লা, বরগুনা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রামসহ সমতলের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৬টি ভিক্ষুসংঘ এতে যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— উপদেষ্টার সহধর্মিণী নন্দিতা চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, এবং জাতীয় কঠিন চীবর দান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রনজ্যোতি চাকমাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবকল্যাণের এই ঐতিহাসিক আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।