শাহজাহান কবির সাজু : অভাবের তাড়নায় বিদ্যালয়ের বারিন্দায়ও যাওয়া হয়নি কোনদিন। অথচ কন্ঠে রয়েছে সুরের যাদু। শ্রমিকের কাজ করার সময় গুনগুন করে গায় নাশীদ (ইসলামী সংগীত)। গুনগুন করা গাওয়া সুমধুর কন্ঠ শুনে অনেকেই চলার পথে দাড়িয়ে শোনে সমধুর কন্ঠের ইসলামী সংগীত। সেই সুরের যাদুকরের নাম মো: সফর আলী (২৫)। পেশায় তিনি রাজমিস্ত্রির শ্রমিক। উপজেলার আলীনগর গ্রামের আবুল কালামের সন্তান সফর আলী ছোট বেলায় মা’কে হারায়। মায়ের মৃত্যুর পর কঠিন সংগ্রাম করেই তাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। তাই পড়ালেখার ইচ্ছা থাকলেও তা আর সম্ভব হয়নি। বাবা আবুল কালাম সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘদিন পঙ্গু অবস্থায় পড়ে আছে বিছানায়। শ্রমিকের কাজ করে সফর আলী পাঁচ’শ, ছয়’শ টাকা যা পায় তা দিয়েই সংসারের খরচ আর বাবার ঔষধের খরচ চালায়।
মোল্লাপাড়া ব্রীজপাড় এলাকায় সফর আলীর সাথে কথা বলে জানা যায়, কাজ করতে করতে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করে। আর কাজের ফাঁকে বিভিন্ন জনের মোবাইল থেকে সংগীত এক’দুবার শুনলেই তা রপ্ত করে নিতে পারে। দু:খের কথা জানাতে গিয়ে বললেন, নিজেদের কোন জায়গা-জমিন নাই। খাস জায়গার উপর নড়বড়ে একটি ঘরেই তার বাবা ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাস করছে। তার শারিরীক গঠন একেবারে দুর্বল হলেও প্রয়োজনে উপোষ থাকবে কিন্তু কারো কাছে হাত পাতার অভ্যাস নেই বলে জানায় স্থানীয়রা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুলতার মাহামুদ ও প্রতিবেশী মো: হারুণসহ অনেকে জানালেন, শত কষ্টের মাঝেও সফর আলীর মুখে হাসি নিত্য লেগেই থাকে। তার কন্ঠে ইসলামী সংগীত শুনতে অনেকেই ছুটে আসে। কেউ কেউ তার সংগীত মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়েও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাদের দাবী তাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর দেয়া হলে কিছুটা হলেও সে উপকৃত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :