পানছড়িতে দুই প্রতারকের চক্ষু চিকিৎসার ফাঁদ-ক্ষমা চেয়ে দ্রুত পলায়ন


admin প্রকাশের সময় : মার্চ ২৯, ২০২৪, ৩:২৯ অপরাহ্ন /
পানছড়িতে দুই প্রতারকের চক্ষু চিকিৎসার ফাঁদ-ক্ষমা চেয়ে দ্রুত পলায়ন

শাহজাহান কবির সাজু : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলায় মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে দু’বার চক্ষু চিকিৎসা ও ছানি বাছাইকরণ ক্যাম্প পরিচালনা করেছে একটি প্রতারক চক্র। এই চক্রটির নাম ট্রিটমেন্ট আই এন্ড ফ্যাকো সেন্টার। উপজেলা ব্যাপী মাইকিং করে একদিন আগে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, অভিজ্ঞ এমবিবিএস ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত হবে এই ক্যাম্প। কিন্তু বাস্তবে চক্রটি শত শত চক্ষু রোগীদের সাথে করেছে প্রতারণা। হাবিব নামের একজন চোখ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করেই রোগীদের ধরিয়ে দিচ্ছেন আড়াইশ-তিনশত টাকা দামের একটি চশমা। সাথে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন তমছম চাকমা। তিনিও ব্যবস্থাপত্র লেখা আর ঔষধ বিক্রিতে ব্যস্ত। রোগী প্রতি বিক্রি করছেন পাঁচ-থেকে ছয়শ টাকার ঔষধ ।
সরেজমিনে চক্ষু ক্যাম্পে গিয়ে ডাক্তার পরিচয়ধারী তমছম কোন মেডিকেল থেকে পাশ করেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, বি-বাড়িয়া ট্রেনিং স্কুল থেকে পাশ করেছেন। বি-বাড়িয়া কোন মেডিকেল থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান কুমিল্লা মেডিকেলের পাশে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার উপর তিনি নাকি কোর্স করেছেন। তাদের কথাবার্ত ও গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: অনুতোষ চাকমাকে ব্যাপারটি অবগত করেন এই প্রতিবেদক। খবর শুনে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: অনুতোষ চাকমা ও উপজেলা স্যানিটরি ইন্সপেক্টর মাকসুদুর রহমান। তাদের উপস্থিতি দেখে বিক্রি করতে আনা ঔষধ ও চশমার বাক্স গুছানোর কাজে ব্যস্ত হাবিব। দু’জনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ডাক্তারের পোশাক পরিহিত হাবিব জানান, সে একজন এসিসটেন্ট আর পাশে থাকা তমছম হলেন ডাক্তার সাহেব। সবকিছু যাছাই-বাছাই করে জানা যায়,তমছমের ডাক্তারী করার কোন যোগ্যতাই নাই। ডাক্তার পরিচয় দেয়ার জন্য তাকে কড়াভাবে সতর্ক করে সিভিল সার্জন ও পানছড়ি স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতি ব্যতীত পানছড়িতে অপচিকিৎসা দিতে আসতে নিষেধ করা হয়। ডাক্তার পরিচয়দানকারী প্রতারকরা রোগীদের চিকিৎসা ফি, বিক্রিত চশমা-ঔষধের টাকা ফেরত দিয়ে নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে দুজন বৃষ্টির মাঝেই বাক্স নিয়েই দ্রুত পানছড়ি ত্যাগ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা: অনুতোষ চাকমা জানান, ডাক্তার পরিচয়ধারী তমছমের চিকিৎসা দেয়ার মতো কোন যোগ্যতাই নাই। ভবিষ্যতে আর করবেনা মর্মে ভুল স্বীকার করায় প্রথমবারের মতো দু’জনকে ক্ষমা করা হয়েছে।