খাগড়াছড়ি সদর ভূয়াছড়িতে শিক্ষকের নির্মম নির্যাতনে হেফজখানার ছাত্রের মৃত্যু


admin প্রকাশের সময় : আগস্ট ২৮, ২০২৩, ৯:০০ পূর্বাহ্ন /
খাগড়াছড়ি সদর ভূয়াছড়িতে শিক্ষকের নির্মম নির্যাতনে হেফজখানার ছাত্রের মৃত্যু

আনোয়ার হোসেন : খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কমলছড়ি ইউনিয়নের ভূয়াছড়ি বায়তুল আমান ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের হাফেজ আমিনুল ইসলাম কর্তৃক হেফজ বিভাগে পড়ুয়া শিশু মোঃ আব্দুর রহমান আবির(৮) নামে এক ছাত্রকে নির্মম পাশবিক নির্যাতন ও বেদম মারধর করায় শিশুটির মৃত হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২৭ আগস্ট রবিবার রাত আনুমানিক ৭ টার দিকে উক্ত মাদ্রাসার ঘাতক শিক্ষক নিজেই শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করলে, মুহূর্তেই ঘাতক শিক্ষক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। শিশুটির শরীরের একাধিক স্থানে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
আব্দুর রহমান আবির খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার আইয়ুব নগর এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক সরোয়ার হোসেন ও আমেনা বেগমের ছেলে। তাদের স্বপ্ন ছিলো ছেলেকে হাফেজ ও বড় মাওলানা বানাবেন। কিন্তু শিক্ষা অর্জন করতে দেওয়া, যদি হয় মরন ফাঁদ, তাহলে স্বপ্ন সেখানে দু:স্বপ্ন ছাড়া কিছু নয় বলে জানিয়েছেন নিহতের আত্মীয়-স্বজন।
ঘাতক শিক্ষক আমিনুল ইসলাম আমিন খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার গচ্ছাবিল এলাকার মৃত পিসি দেলোয়ার হোসেন এর ছেলে। ২৭ আগস্ট রবিবার আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে বাইতুল আমান ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও হেফজ বিভাগে, খাগড়াছড়ি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আরিফুর রহমান, অত্র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ ইদ্রিস আলী হাওলাদার এবং ইউপি সদস্য কাবেল হোসেন, অত্র মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি হান্নান মোল্লা ও এনামুল পিসি সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে মাদ্রাসায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ঘাতক শিক্ষক আমিনুল ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞাস করা হলে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ ঘাতক শিক্ষক আমিনুল ইসলাম প্রায় সময়ই বিনা অজুহাতেই আমাদের উপর পাশবিক নির্যাতন করেন। শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, ২৫ আগস্ট শুক্রবার থেকে শিশু শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান আবির(৮)কে বেশি মারধর করেন এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু না জানানোর জন্য অপরাপর শিক্ষার্থীদের কড়াকড়ি ভাবে নির্দেশ দেন ঘাতক শিক্ষক আমিনুল ইসলাম। পরদিন ২৬ আগস্ট শনিবার আবারও বিদ্যুৎতের তার দিয়ে বেদম মারধর করেন এবং শাস্তি হিসেবে একটি বক্সের ভিতর ৪০ মিনিট আটকিয়ে রাখে আব্দুর রহমান আবিরকে। এতে কোন সাড়াশব্দ না পাওয়ায়া আরেক শিক্ষার্থী বিষয়টি গুরুত্বর ভেবে বক্সটি খুলে আবিরকে উদ্ধার করে।

তারপর থেকে শুরু হয় আবিরের জ্বর ও বমি, শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও তাকে চিকিৎসা করায় নি ঘাতক শিক্ষক। কিন্তু মারধরের ভয় দেখিয়ে নিজের করা বমি খেতে হয়েছে আবিরকে। ঘাতক শিক্ষকের অতিরিক্ত নির্যাতনের কারণে ঝরে গেলো আবির নামে নিষ্পাপ একটি শিশুর প্রাণ। এমন নির্মম হত্যাকান্ডের জন্য আসামীকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আরিফুর রহমান বলেন,মৃত ছেলেটির আত্মীয় – স্বজন বা কারো পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ মামলা/ অভিযোগ করতে আসেনি। তার পরেও অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করতে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশি অভিযান চলছে।