খাগড়াছড়ির নিজ গ্রামে গণ-সংবর্ধনায় সিক্ত- পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা


admin প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩, ৬:৫১ অপরাহ্ন /
খাগড়াছড়ির নিজ গ্রামে গণ-সংবর্ধনায় সিক্ত- পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা

 

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক : খাগড়াছড়ির নিজ গ্রামে সংবর্ধিত হলেন নবনিযুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা। এ গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কমলছড়ি মৌজা’র হেডম্যান কীর্তিময় চাকমা।
১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে কমলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ গণ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সৃষ্টি কর্তার উপর বিশ্বাস রেখে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে প্রথমে তার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং কাজ করে যেতে হবে। আমাদেরকে সুশিক্ষিত হতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা তথা পারিপার্শ্বিক উন্নয়নে যা যা করা প্রয়োজন সেই সকল বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন’। পরিশেষে তিনি সুন্দর একটি সংবর্ধনা আয়োজনের জন্য আয়োজক কমিটিদের প্রতি প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় খাগড়াছড়ির কমলছড়ি গ্রামের প্রয়াত বরুন কুমার চাকমা ও প্রয়াত পদ্মা চাকমা’র ছেলে সুপ্রদীপ চাকমা। তাঁর নাম স্ত্রী নন্দিতা খীসা। তাদের দুই সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে ভাশ্বর চাকমা ও ছোট ছেলে সোহম চাকমা। তাঁরা বর্তমানে কানাডাতে থাকেন। সুপ্রদীপ চাকমার চাকরী জীবনে ১৯৮৫ সালে বিসিএস ৭ম পররাষ্ট্র ক্যাডারে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৮৮সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী সহকারী সচিব হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে যোগদান করেন।
পরবর্তীতে ফরেন এফেয়ার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-এ প্রশিক্ষণ এবং সাভার বিপিএটিসিতে ফাউন্ডেশন ট্রেনিং-এ অংশগ্রহণ করেন। পরে ১৯৯০-১৯৯২সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ফ্রান্স ভাষা এবং ইউরোপিয়ান কূটনৈতিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। প্রশিক্ষণের পর ১৯৯২ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং সহকারী রাজধানী সচিব হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে মরক্কোর রাবাতে বাংলাদেশের ২য় সচিব হিসেবে যোগদান করেন। এবং ১৯৯৬ সালে ১ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কা রাজধানী কলম্বোতে বাংলাদেশের দূতাবাসে কাউন্সিলর হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে পরিচালক (রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রাচার হিসেবে যোগদান করেন। ২০০১ সালে হাওয়াই-এ এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ এর উপর ৩ মাসের প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২০০১ সালে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বাংলাদেশের দূতাবাসে কাউন্সিলর হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৪ সালে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বাংলাদেশের দূতাবাসে মিনিস্টার হিসেবে
যোগদান করেন। ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মহাপরিচালক হিসেবে
যোগদান করেন। ২০০৯ সালে ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রতিবেশী রাষ্ট্র লাওসেরও দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কোস্টারিকা, ইকুয়েডর, হুন্ডুরাস, গুয়েতেমালা, পানামা এবং পেরুর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকারের সচিব পদমর্যাদা লাভ করেন।
উল্লেখ্য যে, তিনি চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে সচিব পদমর্যাদা পাওয়া প্রথম কর্মকর্তা। তিনি ২০২০ সালে স্বাভাবিক অবসর যাওয়ার পূর্বে বাংলাদেশ সরকার আরো ১বছরের জন্য ২০২১ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বর্ধিত করেন। সর্বশেষ চলতি বছর ২০২৩ সালে ২৭ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাঁর সহধর্মিনী নন্দিতা খীসা, সাবেক এমপি যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ির সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সুধীন কুমার চাকমা, সাবেক প্রফেসর বৌধিসত্ব দেওয়ান, সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মধু মঙ্গল চাকমা, জেলা পরিষদ সদস্য শুভ মঙ্গল চাকমা, সাবেক সদস্য বিনোদ বিহারী চাকমা, নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মুজিবুল আলমসহ কমলছড়ি ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনসাধারন উপস্থিত ছিলেন।