হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন মানিকছড়ির পিংকি রানী


admin প্রকাশের সময় : আগস্ট ২৮, ২০২২, ৮:৫৮ অপরাহ্ন /
হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন মানিকছড়ির পিংকি রানী

মো. ইসমাইল হোসেন :- নাম পিংকি রানী নাথ। চট্টগ্রাম মহিলা কলেজে বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষার্থী। পরিবারে মা-বাবা ও ছোট-ভাইবোনকে নিয়ে বেশ সুখেই কাটছিল সংসার। স্বপ্ন ছিল উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজের পায়ে দাড়ানোর। হঠাৎ তার স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো। ২০২১ সালের ১০ জুলাই মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে তার মায়ের মৃত্যু হয়! একই বছরের ১০ নভেম্বর প্রচন্ড জ্বরে বাবাকে হারান! বাবা-মাকে হারিয়ে ছোট-ভাইবোনকে নিয়ে শুরু হয় দুর্বিসহ ও অনিশ্চিত জীবনযাপন! কলেজ পড়ুয়া দুবোন আর ভাইয়ের সংসারে শুরু হয় আর্থিক টানাপোড়া!
ছোট ভাই সাগর চন্দ্র নাথ এ বছর বি. কম এ ভর্তি হবে আর ছোট বোন টিংকি রানী নাথ মানিকছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজে আইএসসিতে। ৩ জনের পড়ালেখা খরচ ও ভরণ পোষণে তাদের মামা নারায়ণ চন্দ্র নাথ নানা ভাবে সহযোগিতা করছেন। কিন্তু নিজের পায়ে দাড়াতে চান পিংকি রানী রাথ। করতে চান নিজের ও ছোট ভাইবোনের স্বপ্ন পূরণ। হতে চান সাবলম্বি। তিন ভাইবোনের পড়াশুনোর খরচ ও নিজেদের ভরণ পোষণের কথা ভেবে বড় বোন পিংকি রানী নাথ গেস্ট টিচার হিসেবে যোগ্যাছোলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। বিদ্যালয় থেকে পাওয়া সামান্য সম্মানি দিয়ে যখন ভাই-বোনের খরচ চালানোই মুশকিল হয়ে পড়ছিল। ঠিক তখনই তিনজনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পার্শ¦বর্তী ব্যর্থ হাঁসের খামারী এমরান হোসেন’র গল্প শুনে নিজে সফল হওয়ার আশায় বাড়িতে গড়ে তুলেন হাঁসের খামার। চলতি বছরের ৮ জুন কুমিল্লা থেকে ৪৫০ টি দেশী জাতের হাঁসের বাচ্চা কিনেই শুরু করেন পারিবারিক ভাবে হাঁসের খামার। খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলাধীন বাটনাতলী ইউনিয়নের ছদুরখীল হিন্দুপাড়ায় গড়ে তুলেছেন তার খামারটি।

উদ্যোগক্তা পিংকি জানান, যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের খাড়িছড়া এলাকার এমরান হোসেন হাঁসের খামার করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি ব্যর্থতার গল্পটাকে সফলতার গল্পে পরিণত করতে কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ ছাড়াই গড়ে তুলেছেন এই হাসের খামার। তবে খামার শুরু করার পর নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়েছে তাকে। যার কারণে প্রায় একশ হাঁসের বাচ্চা মারাও যায় তার। কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়া হাঁসের খামার করা ভূল ছিল বলেও স্বীকার করেন। তিনি বলেন, একজন সফল খামারী হতে হলে অবশ্যই প্রশিক্ষণ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। হাঁস পালনের উপর প্রশিক্ষণ নিতে পারলে এটি অবশ্যই একটি লাভজনক প্রকল্প।
পিংকি আরো জানান, বর্তমানে পুরুষ হাঁস গুলো বিক্রি করে শুধু মহিলা হাঁস গুলো রেখে দিব ডিম উৎপাদনের জন্য। এ পর্যন্ত তার প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। হাঁসের চিকিৎসা, টিকা ও সঠিক পরামর্শ পেলে স্বচ্ছ লালন পালন ও আর্থিক ব্যয় আরও কমে আসতো।