১৯৯৭ সালে খাগড়াছড়ি সদর শালবন গ্রামে শান্তি চুক্তি বিরোধী সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত ১১ আওয়ামী নেতাকর্মীর আত্মত্যাগ কেউ মনে রাখেনি !
ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ১ম পর্ব

সবুজ পাতা ডেস্ক : জন নেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় ১৯৯৭ইং সালের ২রা ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তখন শান্তি চুক্তির বিরুদ্ধে বিএনপি জামাত ও পাহাড়ের কিছু সন্ত্রাসী এক যোগ হয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। খাগড়াছড়িতে কালো পতাকা উত্তোলন করে রাজপথ দখল করেছিলো বিএনপি-জামাত জোট। শান্তি চক্তি বিরোধীদের ভয়ে স্থানীয় আওয়ামী নেতাকর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। ১৯৯৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর সন্ধায় খাগড়াছড়ি সার্কিট হাউজে সাবেক কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এবং উপস্থিত অপরাপর মন্ত্রী ও সাংসদদের নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করেন। এতে শালবন আওয়ামী নেতৃবৃন্দও অংশ গ্রহন করেন। শান্তি চুক্তির পক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় আওয়ামী নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেওয়া হয়। শালবন আওয়ামী নেতৃবৃন্দ সার্কিট হাউজ থেকে এসে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে শালবন মোড়ে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয়ে শন্তি চুক্তির পক্ষে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
এমন সময় শান্তি চুক্তি বিরোধী অগণিত সন্ত্রাসী পরিকল্পিত ভাবে চতুর্দিক হতে ঘেরাও করে ধারালো অস্র, লাঠিসোটা ও রড দিয়ে আওয়ামী নেতাকর্মীদের আঘাত করতে থাকে এবং ‘‘ধর ধর আওয়ামী লীগ ধর, ধইরে ধইরে জবাই কর’’ এই শ্লোগান দিয়ে বাড়ি ঘরে হামলা করে।
তখন আওয়ামী কর্মী (১)মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির-পিতা মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, (২) মো: নুরুল ইসলাম-পিতা ইমান আলী,(৩) মন্তু মিয়া-পিতা সফর উদ্দিন বেপারী (৪) মেনু মিয়া-পিতা কিতাব আলী, (৫) নুর উদ্দিন-পিতা নিজাম উদ্দিন, (৬) মো: সাহেব আলী-পিতা আইয়ুব আলী, (৭) মো: ইসলাম উদ্দিন-পিতা আব্দুল গণি, (৮) মো: বাবুল মিয়া-পিতা আব্দুল জলিল,(৯) মুন্তাজ আলী-পিতা জুবেদ আলী, (১০) আজিজুল ইসলাম-পিতা মফিজ উদ্দিন, (১১) মো: নজরুল ইসলাম-পিতা মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়।
সন্ত্রাসীরা আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা প্রদান করে। আহতদের আত্মীয় স্বজন ও নারী শিশুদের আর্তনাদেও সন্ত্রাসীদের মন গলেনি। প্রায় ২ ঘন্টা পর পুলিশ এসে গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। জিন্নত আলীসহ অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করে। গুরুতর আহত ১১ জনের মধ্যে মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মো: নুরুল ইসলাম, মো: মন্তু মিয়া, মো: মেনু মিয়া, মো: নুর উদ্দিন অকালে মৃত্যুবরন করেছেন এবং মো: সাহেব আলী পঙ্গু। আজিজুল ইসলাম, মো: ইসলাম উদ্দিন, মো: বাবুল মিয়া, মুন্তাজ আলী এবং মো: নজরুল ইসলাম জীবিত আছেন।
১৯৯৭ সালে বিএনপি জামাত জোটের শান্তি চুক্তি বিরোধী আন্দোলনের সময় খাগড়াছড়ি জেলায় শান্তি চুক্তির পক্ষে সর্ব প্রথমে মাঠে নামে শালবন আওয়ামী নেতৃবৃন্দ। তারাই প্রথমে শান্তি চুক্তি বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে। কিন্ত তাদের আত্মত্যাগের কথা কেউ মনে রাখেনি ! ২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় এলে শালবন আওয়ামী নেতৃবৃন্দের উপর নেমে আসে চরম নির্যাতন। চলমান………..