মানিকছড়ি সংবাদদাতা:-দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদী, যেখানে প্রতি বছর রুই, কাতলা, কালিবাউসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে। এই পোনা সংগ্রহ ও বিপণনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার অবদান রাখে হালদা। কিন্তু নদীটির গুরুত্ব যথাযথভাবে না বোঝায় উজানে তামাক চাষ, অবৈধ বালু উত্তোলন ও অপরিকল্পিত বন নিধনের ফলে হালদা আজ সংকটাপন্ন অবস্থায় পৌঁছেছে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিকল্প চাষাবাদকে গুরুত্ব দিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম।
সোমবার (৩ মার্চ) মানিকছড়িতে হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র উন্নয়ন ও মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, হালদা নদী আমাদের ঐতিহ্য ও জাতীয় সম্পদ। এটির সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। তাই অবৈধ বালু উত্তোলন, তামাক চাষ ও পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে হালদার প্রাকৃতিক প্রজনন পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে।
উপজেলা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. রাজু আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হালদা প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আফরোজ ভূঁইয়া, থানার ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. রাজু আহমেদ বলেন, হালদা আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এখানকার মাছের পোনা চাষিরা উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করে সংগ্রহের জন্য, যা দেশের মৎস্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু মানবসৃষ্ট দুর্বৃত্তায়নের ফলে এই নদী আজ সংকটাপন্ন। তাই তামাক চাষের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
এ কর্মশালার আলোচনায় হালদা নদী রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং অংশীজনদের সম্পৃক্ত করে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :