লামায় ফের শীর্ষে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ

মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি:
বান্দরবানের লামা উপজেলায় ১১টি উচ্চ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এস.এস.সি এবং ৪টি মাদরাসার দাখিল পরীক্ষায় হাজার ১ হাজার ৫৭৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১ হাজার ৪৯৬জন। এর মধ্যে মাদ্রাসা পর্যায়ে ২১৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করে ২০২জন, ফেল করে ১৭জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২ জন। স্কুল পর্যায়ে ১ হাজার ২০৬পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করে ১ হাজার ১৭৩জন, ফেল করেছে ৩৩জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৭ জন। উপজেলার স্কুল পর্যায়ে ৪টি ও মাদ্রাসা পর্যায়ে ১টি কেন্দ্রে একযোগে চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ঘোষিত ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এবারে উপজেলায় সর্বোচ্চ পাশের হার ও জিপিএ-৫ পেয়ে শীর্ষে রয়েছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ। গত বছরও ফলাফলে দুর্গম পাহাড়ের কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ উপজেলায় শীর্ষস্থান অর্জন করেছিল। প্রাপ্ত ফলাফলে জানা যায়, উপজেলার লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৫৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১৪০ জন, জিপিএ-৫ পায়নি কেউ, ফেল করেছে ১৮জন, পাশের হার ৯০%। আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩৭ জনের মধ্যে পাশ করেছে ১২৮ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন, ফেল করেছে ৯জন, পাশের হার ৯৩.৪৩%। লামামুখ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৩৮ জনের মধ্যে পাশ করেছে ১১৬জন, এ বিদ্যালয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন, ফেল করেছে ২২জন, পাশের হার ৮৪.০৬%। ফাঁসিয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৫ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৪৩জন, এ বিদ্যালয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন, ফেল করেছে ২জন, পাশের হার ৯৩.৩৩%। চাম্বী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৮৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১৭৮জন, ফেল করেছে ১০, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১জন, পাশের হার ৯৪.৬৪%। আলহাজ্ব শফিক উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৯জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ২৮জন, ফেল করেছে ১জন, এ বিদ্যালয় থেকে কেউ জিপিএ ৫ পায়নি। পাশের হার ৯৬.৫৫%, হায়দারনাশী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করে ৬০ জন। এ বিদ্যালয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩জন। ফেল করেছে ৬জন, পাশের হার ৯০.৯১%। ইয়াংছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৮৭জন, ফেল করেছে ১৫জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন, পাশের হার ৮৭%। ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৮৪ জন, ফেল করেছে ২জন, কেউ জিপিএ-৫ পায়নি, পাশের হার ৯৭.৬৭%। গজালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১৮৪জন, কেউ জিপিএ-৫ পায়নি, ফেল করেছে ১৯জন, পাশের হার ৯১.৬৩%। কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৪২জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২জন, পাশের হার ১০০%। এ প্রতিষ্ঠানের ভোকেশনালে ৮৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৩জনেই পাশ করে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫জন, পাশের হার ১০০%। প্রাপ্ত ফলাফল যাচাই বাছাইকালে দেখে যায়, উপজেলায় সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ। এ বিদ্যালয়ে শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করার পাশাপাশি সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ পেয়েছে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ফলাফল অনুযায়ী এবারে মাদ্রাসার তুলনায় স্কুলগুলো ভালো করেছে। অন্যদিকে, লামা ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ৪৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৪৪জন, জিপিএ-৫ পায়নি কেউ, ফেল করেছে ৫ জন, পাশের হার ৯০%। এ মাদ্রাসার ভোকেশনালে ২৫জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ২১জন। ফেল করেছে ৫জন। মোট পাশের হার ৮৪%। লাইনঝিরি দাখিল মাদ্রাসার ৭৪পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৬৬জন, কেউ জিপিএ-৫ পায়নি, ফেল করেছে ৮জন, পাশের হার ৮৯.১৯%। তামেরি মিল্লাত দাখিল মাদ্রাসার ৩২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ২৫ জন, জিপিএ-৫ পায়নি কেউ, ফেল করেছে ৭জন, পাশের হার ৭৮.২৩%। হায়দারনাশী দাখিল মাদ্রাসার ৩৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৩৫জন, ফেল করেছে ৪জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২জন, পাশের হার ৮৯.৭৪%। ফলাফল অনুযায়ী শতকরা হারে সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছে হায়দারনাশী দাখিল মাদ্রাসা। সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা। ফলাফল বিপর্যয়ের কারনে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওইসব প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা। তারা ফলাফল বিপর্যয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের দায়ী করে বলেন, শিক্ষকদের অবহেলার কারনে ফলাফলে বিপর্যয় হয়েছে। এ বিষয়ে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক মো.শরিফুল আলম বলেন, বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকের আন্তরিক পাঠদান এবং শিক্ষার্থীদের অধ্যাবসায়ের ফলশ্রুতিতে এ ফলাফল অর্জিত হয়েছে। ফলাফলের সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুরিৎ কুমার চাকমা জানান, সব দিক থেকে এবারে উপজেলার মাদ্রাসার চেয়ে স্কুলগুলো ভালো ফলাফল করেছে। তাছাড়া সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ ও শতভাগ পাশের হারে শীর্ষ স্থান অর্জন করে উপজেলার ভারমূর্তি উজ্জ্বল করেছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ। প্রসঙ্গত, প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এসএসসি পরীক্ষা শুারু হলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবার যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে করোনায় আক্রাক্রের হার সহনীয় মাত্রায় পৌঁছানোয় গত ১৪ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত পুনর্বিন্যাস করা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দেড় ঘণ্টায় অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ তিনটি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা।