রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তিন দফা সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনটি সুপারিশ তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘বৈশ্বিক শরণার্থী বিষয়ক উ”চ পর্যায়ের বৈঠক: বৃহত্তর সার্বভৌমত্ব ও সহযোগিতার একটি মডেল’ শীর্ষক বৈঠকে তিনি এসব সুপারিশ তুলে ধরেন।জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শেখ হাসিনা তিন দফা সুপারিশ তুলে ধরেন :প্রথমত:- রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের বৈষম্যমূলক আইন, নীতি ও চর্চার বিলোপ ।দ্বিতীয়ত:- মিয়ানমারকে অবশ্যই বিশ্বাস তৈরি, সুরক্ষা ও অধিকারের নিশ্চয়তা এবং সব রোহিঙ্গার জন্য নাগরিকত্বের পথ সৃষ্টির মাধ্যমে সহায়ক পরিবেশ গঠন করতে হবে। সব বেসামরিক লোকজনকে রক্ষায় যদি প্রয়োজন হয় তাহলে মিয়ানমারের ভেতর ‘সেফ জোন’ তৈরি করতে হবে।তৃতীয়ত:- জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশগুলোর আলোকে জবাবদিহি ও বিচারের ব্যবস্থাা করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস অপরাধ রোধ করতে হবে। শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পতম সময়ে জোর করে বিতাড়িত ১১ লাখের অধিক মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত রোহিঙ্গার মুখোমুখি। তাদের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নিজ বাড়ি থেকে জোর করে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, যেখানে তারা কয়েক শ’ বছর ধরে বসবাস করে আসছিল। ‘আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করছি। কিন্তু সমস্যার বিশালতা আমাদের জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। আমরা ছয় হাজার একরের অধিক ভূমি বরাদ্দ দিয়েছি।’ রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশ, অর্থনীতি ও সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। আন্তর্জাতিক অংশীদার, বিশেষ করে জাতিসংঘের সংস্থাাগুলো রোহিঙ্গাদের সাহায্য করছে। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জাতিসংঘের প্রতিশ্রুত ৯৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাঝে মাত্র ৩৩ শতাংশ তহবিলের বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
রোহিঙ্গা সমস্যার উৎপত্তি হয়েছে মিয়ানমারে এবং সমাধান সেখানেই খুঁজে পেতে হবে। ‘দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে আমরা সীমান্ত খুলে দিয়েছি এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা শুধু জীবন বাঁচাইনি, সেই সঙ্গে এই সংকট আমাদের সীমান্তের মাঝে ধারণ করে পুরো অঞ্চলটিকে স্থিাতিশীল করেছি।’ রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন সম্প্রতি যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়, রাখাইনে ব্যাপকহারে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধানসহ ছয় শীর্ষ সেনা জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি হওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে।