সাধারণ

রামগড়ে বন্ধ হয়নি অবৈধ বালু উত্তোলন, সেতু   ধ্বসে পড়ার উপক্রম

মোঃ শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া আসাদ খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতাঃ :  খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার এক নম্বর ইউনিয়নের অর্ন্তভুক্ত দক্ষিণ লামকুপাড়া এলাকার অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু বড় বড় ট্রাক ভর্তি করে চট্রগ্রামের গ্লাস ফ্যাক্টরীসহ অন্যান্য স্থানে পাচার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাত-দিন সবসময়ই এ অবৈধ কর্মকান্ড চললেও রাতে পাচার কয়েকগুন বৃদ্ধি পায় বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে ওই স্থানের পাহাড়ি ছড়ার ওপর স্থাপিত ২৬ ফুট দৈর্ঘের  একটি সেতু ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অথচ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে বিপণনের জন্য উন্মুক্ত স্থান,ছড়া বা নদীর তলদেশ, সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, বন, থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না।
      সরেজমিন জানা যায়, রামগড় সদর থেকে দক্ষিণে ৫/৬ কিলোমিটার দুরুত্বে আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি টিলা-উপত্যকা পেরিয়ে রামগড় এক নম্বর ইউনিয়নের দক্ষিণ লামকুপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন বারিক মিয়ার বাড়ির পাশে অবৈধ বালুমহালের অবস্থান। লামকু খানকার (ধর্মশালা) দক্ষিণে ও মসজিদের পশ্চিমপাশে। বালু উত্তোলন করায় পুরো জায়গাজুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ধবধবে সাদা, সিলিকন বালু বলছে সবাই। অন্য বালু থেকে দাম ও চাহিদা দুটিই বেশি। চট্রগ্রামের বিভিন্ন গ্লাস ফ্যাক্টরির কাঁচামাল। চট্রগ্রামের ব্যবসায়ীদের মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ থাকার কথা শুনা যায়। পাশাপাশি কয়েকটি বালু উত্তোলন স্পট রয়েছে এখানে। এলাকার প্রবীন ব্যক্তি রেনু সরকার ও অন্য স্থানীয়রা জানান,বড় বড় ট্রাক ভর্তি করে বালু পাচার করায় ওই জায়গার রাস্তা ঘাট মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পাচারকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। চাপা ক্ষোভে ফুঁসছে সবাই।পাহাড়ি দুর্গম এলাকা হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে লাগামহীনভাবে পাচার হচ্ছে এ জায়গার বালু। বেপরোয়া যান চলাচলের কারণে সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন ধরেছে। এ দুরাবস্থা বন্ধ না হলে বর্ষায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।
        জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১৪-১৫ সালে লামকু খালের ওপর সেতুটি নির্মাণে ওই সময় খরচ হয় ২৬ লাখ টাকা। সেতু সংলঘœ অংশ থেকে বেপরোয়া বালু উত্তোলন করায় বর্ষা মৌসুমে এটি ধ্বসে পড়ার মারাত্বক ঝুঁকিতে রয়েছে।
 তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, রামগড় বলিপাড়ার অধিবাসী আবদুল মান্নান (মান্নান কোম্পানী নামে পরিচিত) এর ছেলে সুমন ও সঙ্গীয় লোকজন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পাচারকাজে জড়িত রয়েছে। জানতে চাইলে সুমন বলেন, এই জমিতে ফসল ভালো হয় না। তাই বালু তুলে বিক্রি করেছি। ভবিষ্যতে এখানে মৎস্য চাষের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
     এ প্রসঙ্গে রামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহআলম মজুমদার বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন সমর্থন যোগ্য নয়। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারেন। রামগড় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
     চট্রগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মুফিদুল আলম বলেন, অনিয়মগুলো বন্ধ করা স্থানীয় প্রশাসনের কাজ।
  এদিকে, উপজেলার বৈদ্যপাড়ার পিলাক নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে গত  ৩, মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমান আদালত ক্যাখাই মারমা নামের এক ব্যক্তিকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। ভ্রাম্যমান আদালতের নিবার্হী হাকিম ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) উম্মে হাবিবা মজুমদার বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button