রাঙ্গামাটিতে ২৮ হাজার বই পাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থী

প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটি :
সারা দেশের ন্যায় করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার বই উৎসব না হলেও বিশেষ ব্যবস্থায় রাঙ্গামাটিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে মাতৃভাষায় রচিত বই বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার (১ জানুয়ারী) সকাল থেকেই সরকারি নিদের্শনা অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রেণী ভিত্তিক শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় রাঙ্গামাটিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব মাতৃভাষায় ২৮ হাজার ৭৪৬জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৬৫ হাজার বই বিতরণ করা হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূূত্রে জানা যায়, এই বছর প্রাথমিক পর্যায়ে রাঙ্গামাটিতে ৮৫ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থীকে ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার ৯ শত বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়াও চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত ২৮ হাজার ৭শত ৪৬ জন শিক্ষার্থীকে ৬৪ হাজার ৩শত ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি নিজস্ব মাতৃভাষায় বই বিতরণও শুরু হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে ৮ লক্ষ ৯০ হাজার বই। প্রথম দিনে মাধ্যমিকে বই পেয়েছে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হবে। বছরের শুরুতে নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পেয়ে আমরা খুব খুশি লাগছে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ আমার খুব ভালো লাগে, প্রথম দিন শুধু বইয়ের প্রতিটি পাতাই আমি খুলে দেখবো, আর ঘ্রাণ নেব। নতুন বই হাতে পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাজ্জাত হোসেন জানান, আমাদের হাতে সে সকল বই এসেছে তা জেলার দূর্গম এলাকা পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বছরে প্রথম দিনেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, চাহিদা অনুসারে বই আসতেছে ইতিমধ্যে যেসকল বই এসেছে তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিছু বই এখনো আসেনি সেগুলো আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে চলে আসবে। আমরা আশা করছি রাঙ্গামাটি সকল বিদ্যালয়ে দ্রুত বই বিতরণ কার্যক্রম শেষ করতে পারবো। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসতরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিশুদের জন্য মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে পর্যায়ক্রমে ২০১৮ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম শ্রেণী ও ২০১৯ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী ও ২০২০সালে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত মাতৃভাষায় পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।