মাটিরাঙ্গায় শীতার্তদের কম্বল ও প্রতিবন্ধী চাঁন কুমারকে দোকান দিয়েছে পার্বত্য প্রেসক্লাব

আরিফুল ইসলাম, মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি : মাটিরাঙ্গার আমতলী ইউনিয়নের দূর্গম পাহাড়ি জনপদ বামাগোমতি এলাকায় শীতার্ত মানুষদের কম্বল বিতরন করেছে পার্বত্য প্রেসক্লাব ও দৈনিক সবুজ পাতার দেশ পত্রিকা।
একই সময় এলাকার প্রতিবন্ধী চাঁন কুমার ত্রিপুরার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পার্বত্য প্রেসক্লাব ও সবুজ পাতার দেশ পত্রিকার অর্থায়নে নিমির্ত দোকান ঘর উদ্বোধন করা হয়।
গত ৩০ নভেম্বর বুধবার তৈমুখ স্পোটিং ক্লাব প্রাঙ্গনে কম্বল বিতরন ও দোকান ঘর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মো: আবদুল গণি। এসময় চেয়ারম্যান আব্দুল গণি বলেন, আমতলি ইউনিয়ন একটি পশ্চাদপদ দূর্গম পাহাড়ি এলাকা। নতুন ইউনিয়ন হওয়ায় এখানকার বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধার বরাদ্ধ সীমিত। তা সত্বেও এলাকার মানুষ শান্তিপ্রিয়। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়নি। এলাকায় বিদ্যুতের সমস্য। জনগনের জীবনযাত্রার মান খুবই নিম্ন। এলাকায় দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও এলাকাটি দূর্গম হওয়ায় এখানে এক হাজার টাকায় একজন বর্গাশিক্ষক দিয়ে অনিয়মিত ও স্বল্প পাঠদান করা হয়, যার ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদি ইউনিয়ন ভিত্তিক শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে শিক্ষার পরিবেশ ভাল হবে বলে আশা করা যায়। তবে মাননীয় সাংসদ জনাব কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এ এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। উনার সুদৃষ্টি রয়েছে এলাকার প্রতি। চেয়ারম্যান আব্দুল গণি আরো বলেন, দৈনিক সবুজ পাতার দেশ পত্রিকা ও পার্বত্য প্রেসক্লাবের এই উদ্যোগ দেশের একটি বিরল দৃষ্টান্ত। সীমিত আয়ের মধ্যে থেকেও সাংবাদিকরা এমন জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত হওয়ায় আমি অভিভূত।
তাদের এসব অনুপ্রেরনা মূলক কর্মকান্ডে সমাজের সকল বৃত্তবান মানুষ এগিয়ে এলে দেশ শান্তিময় হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানের এবং পার্বত্য প্রেসক্লাবের সভাপতি দেব প্রসাদ ত্রিপুরা বক্ত্যবে উল্লেখ করেন, প্রেসক্লাব, সাংবাদিক এসব নাম শুনলে ইতো:পূর্বে মানুষ হতভম্ব/ হতকচিত হয়ে উঠতো। কারণ সাংবাদিকরা সাধারনত প্রত্যন্ত এলাকায় কোন না কোনো তথ্য সংগ্রহের জন্যই পৌঁছেন। তথ্য দিলে কোনো ফাঁদে পড়তে হয় কিনা ? এই ভয়ে সরে পড়ে লোকজন। পার্বত্য প্রেসক্লাবের জনকল্যাণ মূলক বহুমুখী কর্মকান্ড দেখে সাধারণ মানুষের পূর্বের সেই ধারনা এখন আর নেই। এখন মানুষ সাংবাদিক দেখে দৌড়ে আসে তাদের অভাব অভিযোগের কথা জানাতে। যদি কোনোভাবে উপকৃত হওয়া যায়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ১৯৫ নং বামাগোমতি মৌজা প্রধান মনোলাল ত্রিপুরা বলেন, সাংবাদিকদের লিখার করণে মানুষদের উপকার হতে দেখেছি কিন্তু এভাবে সরাসরি আত্নমানবতার সেবায় এগিয়ে আসা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সুজন বড়ুয়া, ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নিলয় কান্তি ত্রিপুরা প্রমূখ। উপস্থাপনায় ছিলেন তৈমুখ স্পোর্টিং ক্লাব ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি জ্যোতি ত্রিপুরা।
কম্বল বিতরন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো: আবু তালেব, দৈনিক সবুজ পাতার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মো: জুলহাস উদ্দিন, ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো: ইউনুছ মিয়া, ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য টেবুরঞ্জন ত্রিপুরা, ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আহেমেদ জিহাদ ও বিধান শর্মা প্রমূখ।
উল্লেখ্য অনুষ্ঠানে ৮ নং আমতলী ইউপি চেয়াম্যান আব্দুল গণি তার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধী চাঁন কুমার ত্রিপুরার হাতে ব্যবসার জন্য একটি মোবাইল সেট ও নগদ ৫ হাজার টাকা তুলে দেন।