প্রতিনিধি :একটানা চারদিনের বৃষ্টিতে আবারও বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে বিপর্যস্ত খাগড়াছড়িবাসী। খাগড়াছড়ি পৌরসভায় ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ বন্যায় প্লাবিত পানিবন্দিদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য প্রায় ১০০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। পৌর এলাকায় প্রায় ৬-৭হাজার পরিবার পানিবন্দি।এছাড়াও চেঙ্গী নদী ও মাইনি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চেঙ্গী নদীর দু-কুল উপচে পৌর এলাকার মুসলিমপাড়া, শান্তিনগর, বাঙ্গালকাটি, খবংপুড়িয়া, রাজ্যমনিপাড়া,ফুটবিল, বটতলীসহ কয়েকটি এলাকার হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহরের পৌর বাস টার্মিনাল, নিচের বাজার ও আশপাশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়ক দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও সদর উপজেলার কমলছড়ি ও গোলাবাড়ি ইউনিয়নের গঞ্জপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে কয়েকশত ঘরবাড়িতে বন্যার পানিতে ডুবেছে। রাস্তায় কোমর ও গলা সমান পানি থাকায় নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্যার পাশাপাশি কিছু কিছু জায়গায় পাহাড়ধসের ঘটনাও ঘটেছে। জেলা সদরের শালবন এলাকায় পাহাড় ধসে বাড়ির ভিতরে চাপা পড়ে আবু হানিফ(৬০) নামে একজন গুরুতর আহত হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী কয়েকশত পরিবারের সদস্যদের মাঝে পাহাড় ধসের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়া জেলা সদরের কলাবাগান,হরিনাথ পাড়া,শালবন, রসুলপুর এলাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। মূলত:পাহাড় কেটে যে-সব ঘরবাড়ি তোলা হয়েছে,সেই সব স্থানে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বেশি। পৌর এলাকায় প্রায় দুইশত পরিবার পাহাড় ধসের ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করে। অপরদিকে দুপুরে চেঙ্গী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা সদরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে গঞ্জপাড়া, অপর্ণা চৌধুরীপাড়া,রাজ্যমনি পাড়া, কালাডেবা, বটতলী, ফুটবিল এলাকায় পানি উঠেছে এবং অধিকাংশ ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। এদিকে বন্যার কারণে জেলার চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।দীঘিনালার কবাখালী ও মেরুং এলাকায় সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেক ও লংগদুর সঙ্গে খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
২০ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। পরে যতই সন্ধ্যা আসে,ততই বন্যার পানি বিপদসীমার উপরে প্লাবিত হতে থাকে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান জানান,প্রবল বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় দুর্গত ও পাহাড়ের ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে ।
আপনার মতামত লিখুন :