প্রতিনিধি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলার হাটবাজারে শাক-সবজি ও অন্যান্য পাহাড়ি পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়। পাহাড়ি ও সমতলের মানুষের মিলনস্থল হিসেবে এসব বাজার বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, যেখানে স্থানীয় কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে।
ভোর থেকেই পাহাড়ি নারীরা বাজারের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। তারা অটোরিকশা, পিকআপ, চাঁদের গাড়ি বা মোটরসাইকেলে করে নিজেদের উৎপাদিত শাক-সবজি নিয়ে বাজারে আসেন। সঙ্গে থাকে পাহাড়ি খাবারের নানা উপকরণও। এসব শাক-সবজির মধ্যে ঠান্ডা আলু, পাহাড়ি কচু, ক্ষিরা, জংলি আলু, তিত বেগুন, শামুক, পাহাড়ি হলুদ, আদা, বরই, কাঁচা তেতুল, আমলকি, কলা ও উলুফুল উল্লেখযোগ্য।
পাহাড়ে উৎপাদিত বিশেষ শস্যের মধ্যে “ঠান্ডা আলু” বেশ জনপ্রিয়। এটি কাঁচা খাওয়া যায় এবং শুটকি দিয়ে রান্নার উপযোগী। এছাড়া স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মরিচও ঝাল ও সুস্বাদু, যা পাহাড়ি খাবারে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য হলো “শিমুল আলু”, যা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর খাদ্য তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে স্থান করে নিয়েছে। দেখতে শিমুল গাছের মতো হওয়ায় এটি এই নাম পেয়েছে।
বাজারে কলার উপস্থিতিও উল্লেখযোগ্য, কারণ পাহাড়ে প্রচুর পরিমাণে কলা চাষ হয় এবং তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক পণ্যগুলোর মধ্যে উলুফুল বা ফুল ঝাড়ু পরিচিত, যা ঘরবাড়ি পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত হয়।
পাহাড়ি নারীদের কৃষি উৎপাদন ও বাজারে অংশগ্রহণ শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, সামাজিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। তারা উৎপাদন থেকে শুরু করে বিক্রির পুরো প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকেন, যা তাদের স্বনির্ভরতার পাশাপাশি পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে।
খাগড়াছড়ির এসব বাজার পাহাড়ি ও সমতলের মানুষের মিলনস্থল হিসেবে কাজ করছে, যেখানে পারস্পরিক পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবাহ সৃষ্টি হয় এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি পায়।
আপনার মতামত লিখুন :