সাধারণ

স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা সংলগ্ন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ ইটভাটার গর্বিত মালিক রাশেদ উদ্দীন এবারও ৮নং ওয়ার্ডের কমিশনার প্রার্থী

সবুজ পাতার ডেস্ক ঃ পরিবেশ বিপর্যয়জনিত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হতভম্ব গোটা বিশে^র মানুষ। একুশ শতকের সবচেয়ে আতঙ্কিত বিষয় এখন জলবায়ু পরিবর্তন। এ পরিবর্তনের কারনে সারা পৃথিবীর বৈশিক পরিস্থিতি নাজুক অবস্থায়। এই পরিস্থিতি মানব সভ্যতাকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করাবে তা এখনো খোদ পরিবেশ বিজ্ঞানীদের ধারনার বাইরে রয়ে গেছে।
বিশে^র যখন এই কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা এমনি সময় খাগড়াছড়িতে ৪০ টিরও বেশী ইটভাটার মাধ্যমে চলছে পরিবেশ বিধ্বংসী সব কর্মযজ্ঞ। প্রতিবছর কয়েকটি ভাটায় কিছু টাকা জরিমানা করেই প্রশাসন নিজেদের দায় এড়িয়ে এসব নিষিদ্ধ ইটভাটাকে প্রকারান্তরে বৈধতায় রূপ দিয়ে যাচ্ছেন। খাগড়াছড়িতে কোন ইটভাটা বিগত বছরগুলোতে বন্ধ করা হয়েছে এমনটি নজির নেই।
অথচ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিকর সব কর্মযজ্ঞই এসব ইটভাটায় চলে আসছে বছরের পর বছর। নিষিদ্ধ এসব ইটভাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে ফসলী জমির মাটি, কাটা হচ্ছে পাহাড়, জ¦ালানো হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ। আবাসিক এলাকা, স্কল-কলেজ-মাদ্রাসা, বাজারসহ যেখানে জনসমাগম বেশী সেখানেই গড়ে উঠছে প্রভাবশালীদের এসব অবৈধ ইটভাটা। কিন্তু দেখার কেউ আছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই।
পার্বত্য এলাকায় নিষিদ্ধ ও অবৈধ ইটভাটা জগতের আলোচিত নাম রাশেদ উদ্দিন ওরফে রাশেদ কমিশনার ওরফে হাজী রাশেদ। তিনি সাবেক কমিশনার বটে। তাই প্রভাব প্রতিপত্তি ও বিত্ত বৈভবের অভাব নেই। খাগড়াছড়িতে ইটভাটা মালিকদের মধ্যে অন্যতম সেরা প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। সড়ক বিভাগের জমি দখল করে বিগত কয়েক বৎসর যাবত মাইসছড়িতে অনেকটা স্কুলের মাঠে ২০ ফুট উচ্চতার টিনের চিমনি দিয়ে ভাটার ব্যবসা চালিয়ে আসলেও কয়েকটি নোটিশ দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারছেনা সড়ক বিভাগ। ‘‘এটি সড়ক বিভাগের দুর্বলতা, রাশেদ উদ্দিনের সাথে গোপন আঁতাত নাকি প্রশাসনের গাফিলতি ? এমন প্রশ্নে নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল আহমদ ফয়সাল বলেন, আমরা প্রতি বছরই রাশেদ উদ্দিন কর্তৃক সওজের জমি দখলপূর্বক ইটভাটা স্থাপনের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হই। কিন্তু কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। আগামী ২-১ দিনের মধ্যেই আরো নোটিশ দেওয়া হবে।’’
খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক প্রদীপ চৌধুরী বলেন, ‘‘খাগড়াছড়িতে যতগুলো ইটভাটা রয়েছে সবগুলো একেবারেই অবৈধ। প্রশাসন যেটুকু অভিযান পরিচালনা করে তা একেবারেই অপ্রতুল। আরো কঠোর অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। নতুবা খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধ্বস, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, ফসলহানি, মানুষের স্বাস্থ্যহানিসহ নানান বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে।’’

এবারের পৌর নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ডের কমিশনার প্রার্থী রাশেদ উদ্দিন। মার্কা উটপাখি। কোনভাবেই নির্বাচিত হলে আরো বহুগুন বাড়বে রাশেদের প্রভাব। প্রভাবের সাথে হয়তো বাড়তে পারে তার ইটভাটার সংখ্যাও। বাড়বে জনদুর্ভোগ। রাশেদের বিষাক্ত ইটভাটার ক্ষতিকর প্রভাবও সর্পবিষের ন্যায় দ্রুততার সাথে ছড়িয়ে পড়বে এখানকার আকাশে বাতাসে। ক্যান্সারসহ বায়ুদুষনজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে ঝরে যাবে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। যে ক্ষতির কোন পরিমানযোগ্য নায়, সেখানে কয়েক হাজার টাকা জরিমানা করেই প্রশাসন বৈধতা দেবে রাশেদ কমিশনারদের অবৈধ ও নিষিদ্ধ এসব ইটভাটার। আর কত দিন চলবে এসব ? কবে সচেতন হবে এখানকার মানুষ ? মানুষের-পরিবেশের-দেশের-বিশে^র বারোটা বাজিয়ে আর কত বিত্ত ভৈববের মালিক হলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবেন রাশেদ কমিশনাররা ? তবুও কি সব ভূলে, ভূলোমনা ৮নং ওয়ার্ডের সহজ সরল খেটে খাওয়া মানুষজন ফের কমিশনার বানাবেন রাশেদকে ? এমনটাই জিজ্ঞাসা সচেতন মহলের।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button