সাধারণ

তুরস্কের প্রস্তাবিত ইসলামি সেনাবাহিনী (এক)

 

মো: বজলুর রশীদ: ‘ইসলামি সেনাবাহিনী’ নামে একটি যৌথ সেনাবাহিনী গঠনের প্রস্তাব করেছে তুরস্ক। গত ১৮ মার্চ দেয়া এই প্রস্তাব পশ্চিমা বিশ্বের নজর কেড়েছে। তুরস্কের পত্রিকা ‘ইয়ানি সাফাকে’ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়েছে- এই সেনাবাহিনীতে পাঁচ মিলিয়ন বা ৫২ লাখ ছয় হাজার ১০০ জন সেনা থাকবে। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাার ৫৭টি দেশের কাছে প্রস্তাবটি পাঠানো হয়েছে। ওআইসির সদস্য এসব দেশ থেকে সামরিক বাজেট হিসেবে প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহের প্রস্তাবও রয়েছে।

পত্রিকা লিখেছে- প্রথম অপারেশনে দুই লাখ ৫০ হাজার সৈন্য অংশগ্রহণ করবে। মুসলিম দেশগুলোর কৌশলগত বিমান ও নৌঘাঁটি ব্যবহার করা হবে। অতি দ্রুত নতুন যৌথ সামরিক ঘাঁটি, বিমান ঘাঁটি ও নৌবন্দর তৈরি করা হবে এবং ইসরাইল পর্যন্ত যোগাযোগ রুট তৈরি করা হবে। জানা যায়, ইসরাইল ও পশ্চিমা বিশ্বের আগ্রাসন মোকাবেলা করতেই এমন পরিকল্পনা করছে এরদোগান সরকার। ইসরাইল কর্তৃক জেরুসালেমকে রাজধানী ঘোষণা ও সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থাানান্তর মুসলিম বিশ্বকে নাড়া দেয়। ওই সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছিলেন, ‘আমরা জেরুসালেমকে রক্ষা করতে না পারলে মক্কা-মদিনাও রক্ষা করতে পারব না’।

প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে- ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাা নেয়ার জন্য এই বাহিনী। যদি আদতেই এমন কোনো যৌথ বাহিনী গঠন সম্ভব হয় তবে বিশ্বে এটি হবে সবচেয়ে বড় সেনাবাহিনী। যদি ন্যাটোর আদলে এই বাহিনীকে স্থাল, নৌ ও বিমানবাহিনী দিয়ে সজ্জিত করে আধুনিকায়ন করা হয় তবে তা শত্রুদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। ওআইসির গত বিশেষ অধিবেশনে ‘জেরুসালেম ডিউটি গ্রুপ’ গঠনের ‘সামরিক ব্যবস্থাা’ গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ওআইসি সদস্য দেশগুলোর জনসংখ্যা ১৬৭ কোটির বেশি। এসব দেশের মধ্যে সামরিক বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ৫২ লাখেরও বেশি এবং তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট ১৭ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার।

অন্য দিকে ইসরাইলের মোট জনসংখ্যা ৮০ লাখ ৪৯ হাজার ৩১৪। এর সামরিক বাহিনীর সক্রিয় সদস্য মাত্র এক লাখ ৬০ হাজার জন এবং প্রতিরক্ষা বাজেট ১৫.৬ বিলিয়ন ডলার। ওআইসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৬৯ সালে পবিত্র আল-আকসায় আগুন লাগানোর ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়। তাই জেরুসালেমে রাজধানী করার বিষয়ে অবশ্যই ওআইসির জোরালো পদক্ষেপ থাকা দরকার। জাতিসঙ্ঘের পর ওআইসি বিশ্বে সবচেয়ে বড় সংগঠন। চারটি মহাদেশে রয়েছে ৫৭টি মুসলিম দেশ। এই দেশগুলো সামরিকভাবে একত্র হলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী সেনাবাহিনীতে পরিণত হবে। আরো বলা হয়েছে- প্রথম আঘাতের জন্য ৫০০ ট্যাংক ও অস্ত্রসজ্জিত সামরিক যান, ১০০ বিমান ও ৫০০ অ্যাটাক হেলিকপ্টার এবং ৫০টি যুদ্ধজাহাজ প্রয়োজন।

তুরস্কের একক সামরিক শক্তিও কম নয়। বিশ্বে সপ্তম সেনাবাহিনী হিসেবে এটি পরিচিত। ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে তুরস্ক দ্বিতীয় স্থাানে। তুরস্কের চার হাজার ট্যাংক, এক হাজার বিমান এবং ১৩টি সাবমেরিন রয়েছে। পাকিস্তানের রয়েছে পরমাণু বোমা। ইরানের রয়েছে বড় যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দেয়ার মতো ছোট ছোট ড্রোন বোট, উন্নত মিসাইল, নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি করা যুদ্ধবিমান। ওআইসিতে তাই তুরস্ক, পাকিস্তান ও ইরানের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।

Back to top button