আবদুল আলী :
গুইমারায় ২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের পরিপত্রের জটিলতার কারণে অনেক যোগ্য বাঙালি নতুন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারছেন না।
২১ আগস্ট ২০২৪ তারিখে জারি করা নির্বাচন কমিশনের পরিপত্র নং ১৭.০০.০০০০.০২৬.৩২.০১২.২৩.৩০৮ অনুসরণ করতে গিয়ে গুইমারা উপজেলার অনেক বাঙালি নাগরিক ভোটার নিবন্ধনে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় পরিপত্রের বিভিন্ন শর্তের কারণে বিশেষ করে মুসলিম বাঙালি নারীদের ক্ষেত্রে কাবিননামা না থাকার কারণে ভোটার নিবন্ধনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিপত্রের ‘বি’ ক্যাটাগরির ৩ ও ৪ ধারায় বাবা-মায়ের (এএফআইএস) ও স্থায়ী বাসিন্দার সনদ বাধ্যতামূলক করায় অনেকের জন্য জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে নতুন ভোটার নিবন্ধনে আগ্রহী অনেকেই তালিকাভুক্ত হতে পারছেন না।
বড়পিলাক গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী সখিনা আক্তারের পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দেওয়ার পরও কাবিননামা না থাকায় বড়পিলাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক চাইথোয়াই মারমা তাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাইথোয়াই মারমা কোনো স্পষ্ট জবাব না দিয়ে শুধু জানান, ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এছাড়া, দ্বিতীয় পরিপত্রে মৌজা প্রধান (হেডম্যান) এর সনদ জমা দেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গুইমারা উপজেলার কয়েকটি মৌজার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, নিয়মিতভাবে হেডম্যানদের পাওয়া যায় না, ফলে সনদ সংগ্রহ করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বড়ইতলী মৌজার বাসিন্দা দুলাল হোসেন জানান, তাদের হেডম্যানকে খুঁজে পাওয়া যায় না, যা নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজাতীয় হেডম্যানদের অধীনে থাকায় বাঙালি বাসিন্দারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। একই ধরনের সমস্যায় পড়েছেন ২০৯ নং বড়পিলাক ও ২২৭ নং হাফছড়ি মৌজার বাঙালি বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, স্থায়ী বাসিন্দা সনদ পেতে অন্তত এক মাস সময় লাগে, কিছু ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়। জমির কাগজ না থাকলে মং রাজা এই সনদ প্রদান করেন না, যা অনেকের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে।
গুইমারাসহ পুরো জেলায় ভোটার হালনাগাদ ও নতুন ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য পরিপত্রের ৩ ও ৪ ধারার শর্ত বাতিলের দাবিতে রাজনৈতিক দল ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ নির্বাচন কমিশনে আবেদন ও স্মারকলিপি জমা দিয়েছে।
এ বিষয়ে গুইমারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দাস জানান, ২৩ জানুয়ারি বিশেষ এলাকার জন্য ভোটার হালনাগাদ সহজীকরণের একটি নতুন পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে আংশিক সহজীকরণের কথা বলা হলেও স্থানীয় মৌজা প্রধানের (হেডম্যান) সনদের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। ফলে অনেক নতুন ভোটার তালিকাভুক্ত হতে পারছেন না।
আপনার মতামত লিখুন :