সাধারণ

খাগড়াছড়ির ৯ উপজেলায় পাল্টাচ্ছে„ পাহাড়ের ফসলি জমি শস্য খেতের চিত্র

 প্রতিনিধি

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা ৯ উপজেলায় পাল্টাচ্ছে পাহাড়ের ফসলি জমি শস্য খেতের চিত্র। পুষ্টিগুণে ভরপুর ভুট্টা মানুষ ও পশু খাদ্যের অন্যতম উপাদান হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশ, দামও ভালো। ফলে জেলাব্যাপী তামাকের পরিবর্তে চলতি বছরে বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টা চাষ বেড়েছে কয়েক গুণ। খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলা আনাচে-কানাচে বিস্তীর্ণ এলাকা এখন সবুজ ভুট্টায় ভরপুর। বিভিন্ন তামাকজাত কোম্পানির প্রলোভনে এক দশকের বেশি সময় ধরে জেলাতে চাষ হয়ে আসছে ক্ষতিকর তামাক।
দেরিতে হলে তামাক কোম্পানিগুলোর ঠকবাজি বুঝতে পেরে কৃষকরা তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছে ভুট্টাসহ মৌসুমি রবি শস্য চাষ। ফলে ধীরে ধীরে পাল্টাতে শুরু করেছে পাহাড়ের ফসলি মাঠের চিত্র। উৎপাদিত ভুট্টার বিক্রিতে নিশ্চিয়তা থাকায় কৃষকরা চাষ করছে বাণিজ্যিকভাবে। কৃষকরা জানান, বিভিন্ন প্রলোভনে পড়ে তামাক চাষ করে তারা

এতোদিন নানানভাবে লোকসান গুনেছেন। দীঘিনালা উপজেলার মো: আব্দুল করিম এক সময় তার কৃষি জমিতে তামাক চাষ করতেন। গত বছর থেকে তামাক চাষ ছেড়ে দিয়ে ভুট্টা চাষ শুরু করেছে। আব্দুল করিম আরো জানান, তামাক কোম্পানীগুলোর নানা প্রলোভনে পড়ে তিনি তামাক চাষ করে অনেক লোকসান দিয়েছেন। তিনি এখন দেনার দায়ে জর্জড়িত। তার মতো অনেক কৃষক তামাক চাষ করে পথে বসার উপক্রম হয়েছেন। তামাক চাষ ক্ষতিকারক হলেও খাগড়াছড়িতে এটি বন্ধে নেই কোনো সরকারি নির্দেশনা বালাই। তারপরও কৃষি জমির উর্বরতা ও ক্ষতি ঠেকাতে এই চাষে নিরুৎসাহিত করেছে কৃষি কর্মকর্তারা।

দীঘিনালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করে মৌসুমি রবি ফসল চাষে
উদ্বুদ্ধ করতে চাষীদের নানান পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তামাকের বিকল্প হিসেবে ভূট্টাসহ অন্যান্য ফসল চাষে দিচ্ছেন বীজ, সার ও কারিগরি সহায়তা মতো প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক ড. মো: শফি উদ্দিন বলেন, তামাক চাষ থেকে ফিরে আসতে চাষীদের মধ্যে সচেতনা ও প্রণোদনা দেওয়ার কারণে জেলার ৯টি উপজেলাতে ক্রমেই
তামাক চাষ কমছে। গত বছর যেখানে জেলায় ৬৩০হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিলো সেখানে চলতি বছরে হ্রাস পেয়ে ৫৮০হেক্টরে নেমেছে। অপর দিকে খাগড়াছড়িতে চলতি মৌসুমে ৫৩০হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪হাজার ৩৩৫মেট্টিক টন। পক্ষান্তরে গত বছর খাগড়াছড়িতে ভুট্টা চাষ হয়েছিলো ৫০২হেক্টর
জমিতে। এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে খাগড়াছড়িতে খুব শিগগিরই তামাক চাষ বিলুপ্ত হবে এমনি ধারনা এই কৃষি কর্মকর্তার।
উল্লেখ্য বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় খাগড়াছড়ির কৃষকেরা ক্রমেই
তামাকের পরিবর্তে ভূট্টা চাষের দিকে ঝুকে পড়ছে। পুষ্টিগুণে ভরপুর
ভূট্টা মানুষ ও পশু খাদ্যের অন্যতম উপাদান হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশ।ফলে
চলতি বছরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে ভূট্টা চাষ
বেড়েছে কয়েক গুন।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button