সাধারণ

খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় লাভজনক আনারস চাষ

সারের দুষ্প্রাপ্যতাসহ নানান সমস্যায় নাভিশ্বাস চাষীদের

মনির উদ্দিন মুন্না ঃ খাগড়াছড়ি জেলার সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লাভজনক আনারস চাষ। এবছর ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের নতুন বাগান এলাকাতেই ১২০ একর জমিতে রোপন হয়েছে প্রায় ৪০ লক্ষ আনারসের চারা। যা হতে উৎপাদিত আনারসের বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। গত বছর এ এলাকায় আনারস বিক্রি হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকার।

রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর এলাকার চাষীদের এলাকায় ডেকে এনে চারা রোপনসহ যাবতীয় পরিচর্ষার কাজ শিখে নিয়েছেন ভাইবোনছড়ার চাষীরা। বৈশাখ-শ্রাবন মাসে চারা রোপন করে চৈত্র মাসে ফলন পাওয়া যায়। চারা থেকে চারা ৬ ইঞ্চি এবং লাইন হতে লাইনের দুরত্ব ২ ফুট রেখে রোপন করতে হয় বলে জানান চাষী নয়ন মনি চাকমা।
অপর চাষী রিপন চাকমা গত বছর ১ লক্ষ আনারসের চারা রোপন করে ১৪ লক্ষ টাকার আনারস বিক্রি করেছেন বলে জানান। গতবার ভাল লাভ হওয়ায় এবছর রিপন ৩ লক্ষ আনারস লাগিয়েছেন। যাতে তার খরচ হবে প্রায় ১৫ লক্ষ এবং প্রায় ৪০-৪৫ লক্ষ টাকার আনারস পাওয়ার আশা করছেন।
চাষী ধর্ম জ্যোতি চাকমা জানান, তিনি গত বছর ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে ১০ হাজার আনারস লাগিয়ে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। লাভের পরিমান বেশী হওয়ায় তিনিও এবছর ৭০ হাজার চারা লাগিয়েছেন।
সোনায়ন চাকমা রোপন করেছেন দেড় লাখ চারা। তিনি আরো জানান প্রতি হাজার আনারস চারার জন্য সার প্রায়োজন হয় ১ বস্তা। আমার ১৫০ বস্তা সারের প্রায়োজন। প্রতি বস্তা সার ১-২শ টাকা বেশী দিয়ে কিনতে হয়। সে হিসেবে সার বাবদ তার ১৫-৩০ হাজার টাকা বেশী খরচ হয়।
এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ সহকারী কৃষি কমকর্তা লাল কমল চাকমা জানান, এলাকার আনারস চাষীদের সাথে প্রায় সময় কথা হয়। আমি তাদেরকে সার সংগ্রহসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।
ভাইবোনছড়া বাজারের সার ব্যবসায়ী কাজল বড়ুয়া বলেন, এলাকায় আনারস চাষ নতুন বিধায় সার বরাদ্ধ হয়নি। আবেদন করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ আগামী বছর সার বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ।লাভজনক এই আনারস চাষ এলাকায় ক্রমে জনপ্রিয় হলেও সারের দুষ্প্রাপ্যতাসহ নানান সমস্যায় অনেক কৃষক চাষের আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তারা জানান, কৃষি বিভাগের লোকজনকে অনেকবার ডাকলেও একবারও আনতে পারেনি আনারস ক্ষেতে। তাছাড়া স্থানীয় বাজার ভাইবোনছড়ায় পর্যাপ্ত সার না পাওয়ায় ২৫ কিলোমিটার দুরত্বের খাগড়াছড়ি সদর হতে বেশী গাড়ী ভাড়া দিয়ে সার আনতে হয় বিধায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় এবং লাভের পরিমান কমে বলে জানান চাষীরা।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।

Back to top button