সাধারণ

খাগড়াছড়িতে ইটভাটা স্থাপনে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা নেই

ধারাবাহিক প্রতিবেদনের তৃতীয় পর্ব

সবুজ পাতা ডেস্ক : খাগড়াছড়িতে অবৈধ ইটভাটায় জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বনের কাঠ। লাইসেন্স নেই, বন বিভাগের অনুমোদন নেই, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই। যে যার ইচ্ছামত স্থাপন করছে ইটভাটা। আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা বা সংরক্ষিত বনাঞ্চল সবখানেই স্থাপন করা হচ্ছে ইটভাটা। জেলার ৩৩টি ইটভাটায় যুগে যুগে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বনের অপরিপক্ষ অবৈধ কাঠ। জ্বালানী কাঠের জন্য কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর ইটভাটা থেকে ৮কোটির অধিক রাজস্ব আদায় করতে পারতো। কিন্তু সমঝোতার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ লাখ দুয়েক টাকা জরিমানা আদায় করে। সরকার বিগত ২০ বছরে নুন্যতম ১৫শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
বাংলাদেশ গেজেট, ২০ নভেম্বর ২০১৩। যা জুলাই ২০১৪ হতে কার্যকর হয়েছে। ক্রমিক নং- ৪ এ উল্লেখ রয়েছে, লাইসেন্স ব্যতীত ইট প্রস্তুত নিষিদ্ধ। অর্থাৎ জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে লাইসেন্স ব্যতীত ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। ৬. জ্বালানী কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধ। ৮. (ক) আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকায় ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। (৩) (খ) বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতীত, সরকারী বনাঞ্চলের সীমা রেখা হইতে ২ (দুই) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। (৪) (ক) আবাসিক এলাকা’’ অর্থ এমন কোন এলাকা যেখানে কমপক্ষে ৫০টি পরিবার বসবাস করে।**
খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলাধীন মাইসছড়ি বাজারের ১০০গজ উত্তরে পাঁচ সহাস্রাধিক জনসংখ্যা অধ্যষিত নুনছড়ি গ্রামের মধ্যভাগ (ইটভাটার সীমানা লাগোয়া বসতবাড়িও রয়েছে), মাইসছড়ি হাই স্কুল ও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০০গজ এবং বিজিতলা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ৭০০ গজ দক্ষিণে ৩০ ফুট উ”চতার ড্রামশীটের চিমনী দিয়ে অনুমোদন বিহীন অবৈধ ইটভাটা তৈরি করেছেন খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা রাশেদ উদ্দিন। প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ টন বনের কাঠ অবৈধভাবে পুড়িয়ে পরিবেশের অপূরনীয় ক্ষতি সাধন করছে জেলার ইট প্রস্তুতকারক চক্র। ইটভাটা লাগোয়া বসতবাড়ি, হাটবাজার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় জন সাধারনের অভিযোগের অন্ত নেই। ২১/০১/২০১৯ইং তারিখে মাইসছড়ি বাজার চৌধুরী উগ্য মারমা বলেন, ‘বাজার সংলগ্ন ইটভাটা স্থাপনে আমাদের কোন সম্মতি নেই। বাণিজ্যিক ও জনবহুল আবাসিক এলাকায় টিনের চিমনীর ইটভাটায় অবৈধভাবে কাঠ পোড়ানোর কারনে আশে পাশের গাছ পালা সব উজাড় হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশের খুব ক্ষতি হচ্ছে
নুনছড়ি গ্রামের আ: রহিম বলেন, ইটভাটা সীমানা লাগোয়া বসতবাড়ী থাকায় ধুলোবালির কারনে অনেকের শ্বাস কষ্ট বেড়ে গেছে। আমরা প্রতিবাদ করলে মালিকের লোকজন হুমকি দেয়। ছাত্রনেতা হুমায়ূন কবির বলেন, ‘ইটভাটার মালিক- প্রশাসন, সাংবাদিক এবং দলীয় নেতৃবৃন্দের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধভাবে ইটভাটার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
দেখেন, পাশেই বাজার, ইটভাটার সীমানার সাথে অনেক গুলো বাড়ি। ঐদিকে আবার দুটি স্কুল। পাকা চিমনী না বানিয়ে তেলের ড্রাম কেটে মাত্র ৩০ ফুট উচ্চতার টিনের চিমনী তৈরি করা হয়েছে। আর কাঠ তো পুড়তেছেই। অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে বিজিতলা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। জনগনের অনেক অভিযোগ আছে। থাকলে কি হবে ? প্রশাসন যদি দেখেও না দেখে তাহলের পাবলিকের কি করার আছে’।?
অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে খাগড়াছড়ি ইটভাটা মালিক সমিতির দুই কর্ণধার ঠিকাদার মো: সেলিমের সাথে ২১/০১/২০১৯ইং তারিখে ০১৮১৯৩২৯৮৭৪ নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেন নি। নাম ফলক বিহীন মাইসছড়ির অবৈধ ইটভাটার মালিক রাশেদ উদ্দিনের সাথে ০১৫৫৩৯৬০৮৮৮ নাম্বারে ফোন করলে তিনিও মোবাইল রিসিভ করেন নি। অতপর রাশেদ উদ্দিন সম্মুখ সাক্ষাতেও কথা না বলে এড়িয়ে যান। পুনরায় ২৮/০১/২০১৯ইং তারিখে রাশেদ উদ্দিনের সাথে ০১৫৫৩৯৬০৮৮৮ নাম্বারে ফোন করলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেন নি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, খাগড়াছড়ি। জেএম শাখা স্বারক নং -০৫.৪২.৪৬০০.০১২.১৮.৭৫১ তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৮। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া আহমেদ সুমন স্বাক্ষরিত তথ্যে খাগড়াছড়ি জেলায় ৩৩টি ইটভাটার কথা উল্লেখ রয়েছে। তার মধ্যে মহালছড়ি উপজেলায় ৩টি ইটভাটার মধ্যে রাশেদ উদ্দিনের মাইসছড়ি বাজার সংলগ্ন ইটভাটার কোন তথ্য নেই।

জেলা প্রশাসক, খাগড়াছড়ি কর্তৃক ১২/১১/১৮ইং তারিখে স্বাক্ষরিত ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ)আইন, ২০১৩ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সভায় অনুচ্ছেদ (ঙ) বিবিধ : সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১. অনুসন্ধান কমিটি ইটভাটা স্থাপন সংক্রান্ত জায়গা তদন্ত করে ইতিবাচক প্রতিবেদন দিলে লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ২. জ্বালানী কাঠের পরিবর্তে কয়লা ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ৩. ইট তৈরির জন্য পাহাড় কেটে মাটি আহরন করা যাবে না। ৪. ইট পোড়ানোর জন্য টিনের চিমনী ব্যবহার করা যাবে না। ১২০ফুট উচু চিমনী তৈরি করতে হবে। ৫. চলমান ইটভাটা ব্যতীত আধুনিক পদ্ধতি অনুসরন ব্যতিরেকে নতুন কোন ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না’’।
২৩ জানুয়ারী মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না মজুমদার বলেন, ১০-১৫ দিন আগে মাইসছড়ি ইটভাটায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩০হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলিম উল্লাহর তথ্য মতে খাগড়াছড়ি জেলা সদর এবং মহালছড়ি উপজেলায় লাইসেন্স প্রাপ্ত কোন ইটভাটা নেই।
১৬ জানুয়ারী ২০১৯খ্রি: বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মহালছড়ি উপজেলা রাঙ্গামাটি রেঞ্জের অধীনে তাই পাশে রিজার্ভ বন থাকলেও আমার করার কিছুই নেই। টিনের চিমনী ব্যবহার করে বনের কাঠ, অবৈধভাবে ইটভাটায় জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা অন্যায়। সে বিষয়ে জেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। আমি বলব আমার রিজার্ভ বন থেকে কোন কাঠ যাচ্ছেনা। জ্বালানী কাঠ বৈধ বা অবৈধ এ বিষয়টি আমি বলছি না। জ্বালানী কাঠ ইটভাটায় ব্যবহারের ফলে পরিবেশের যে ক্ষতি হচ্ছে এইটিই বড় উদ্বেগের বিষয়। অনেক ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদ কর্মী আমার কাছে এসেছিলেন, আমি তাদেরকে অবৈধ ইটভাটায় গিয়ে লাইভ দেখানোর জন্য অনুরোধ করেছি কিন্তু কেউ লাইভ তো দুরের কথা কোন প্রতিবেদনও প্রকাশ করেনি। তাছাড়া তো ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ করে জেলা প্রশাসক । আমরা ইচ্ছা করলেও যখন তখন অভিযান পরিচালনা করতে পারি না। আমরাও চাই এই বিষয়গুলো মিডিয়ায় আসুক। আমরা অবৈধ গাছ/কাঠসহ গাড়ি আটক করি কিন্তু যাহারা অবৈধভাবে কাঠ সংগ্রহ করে তাহারা আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বিভিন্নভাবে বেরিয়ে এসে পুনরায় একই অপরাধে লিপ্ত হয়। যেমন গত ৫/৮/২০১৮ইং তারিখে বিজিবির পলাশপুর জোন ও বন বিভাগ টহলকালীন সময় গামার ও বিবিধ ৭২ টুকরা গোল কাঠসহ চট্টমেট্রো-ট-১১-৪৯৯২ গাড়িটি আটক করে পি.ও.আর.মামলা দায়ের করি। মামলা নং-পি.ও.আর/১৪/মাটি-অব-১৮-১৯ এবং সি.আর. নং-০৮/১৮। দায়রা জজ আদালত ধার্য্য তারিখ ব্যতিত ১৫/১২/২০১৮ইং তারিখে মো: আবুল কালামের নিকট আটককৃত গাড়িটি জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করলে বন বিভাগ ২৬/১১/২০১৮ইং গাড়ির প্রকৃত মালিক মো: আবুল কালামের নিকট হস্তান্তর করে । এক মাস পূর্বে আবুল কালামের জিম্মায় নেওয়া (চট্টমেট্রো-ট-১১-৪৯৯২) একই গাড়িটি ২৫/১২/২০১৮ইং তারিখ অবৈধভাবে পরিবহন কালে ৬৯ টুকরা গোল কাঠসহ বিজিবি চেক পোস্টে আটক হয়। মামলা নং-পি,ও.আর/১০৯/মাটি-অব-২০১৮-১৯ এবং সি.আর. মামলা নং-১৮/২০১৮(বন)। পুনরায় একইভাবে ধার্য্য তারিখ ব্যতীত ১৩/০১/২০১৯ইং তারিখ বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, খাগড়াছড়ি বন আদালত গাড়ির প্রকৃত মালিক একই ব্যক্তি আবুল কালামের নিকট গাড়িটি জিম্মায় দেওয়ার জন্য বন বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করে। আমরা অনেক পরিশ্রম করে গাড়িসহ অবৈধ কাঠ আটক করি কিন্তু আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে এসে আবার একই অপরাধে লিপ্ত হয়।
আমরা ২০১৭-১৮ইং সালে পি.ও.আর. মামলা ১৩টি, সি.ও.আর. মামলা ৯টি এবং ইউ.ডি.ও.আর. মামলা ১২৬টি দায়ের করি। খাগড়াছড়ি বন বিভাগের অধীনে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ৬,২০০একর। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ জ্বালানী কাঠ, গোল কাঠ, আসবাবপত্র, মুলিবাশঁ ইত্যাদি জব্দ করে বন বিভাগ রাজস্ব আদায় করেছে ১কোটি ৬৮লক্ষ ৯৫হাজার ৯শত ৫৫টাকা এবং ২০১৭-১৮অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ২কোটি ৩৮লক্ষ ১হাজার ৭শত ৫৭টাকা। এক মন জ্বালানী কাঠ থেকে রাজস্ব আদায় হয় নুন্যতম ৫০টাকা। কম বেশিও হয়। অর্থাৎ এক ঘনফুট জ্বালানী কাঠ ১৭ টাকা। ৩ ঘন ফুটে ১ মণ হয়।
১৫ জনুয়ারী/২০১৯খ্রি: তারিখে জেলা প্রশাসক মো: শহিদুল ইসলামের নিকট অবৈধ ইটভাটা এবং বনের কাঠ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে অবগত করলে জেলা প্রশাসক অনুমোদন বিহীন অবৈধ ইটভাটায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। (২৮/০১/২০১৯ইং তারিখ পর্যন্ত অনুমোদনবিহীন মাইসছড়ির অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা যায়। ইটভাটার চিমনী দিয়ে সাদা ধোয়া বের হলে তা অবশ্যই জ্বালানী কাঠ। কয়লা ব্যবহার হলে কালো ধোয়া বের হবে। বিগত ১ যুগে খাগড়াছড়িতে ১টন কয়লা আমদানী হয়েছে এরকম নজির নেই।
পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের অভিযোগ, রাশেদ উদ্দিনের মাইসছড়ির ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমোদন নেই, জেলা প্রশাসক কর্তৃক লাইসেন্স নেই। তবুুুুও কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে আবাসিক এলাকায়, হাটবাজার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যস্থলে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সন্নিকটে টিনের চিমনী ব্যবহার করে বনের কাঠ অবৈধভাবে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করে কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে ইটভাটার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া জেলায় বাড়ছে অবাধে করাত কল। আছে জ্বালানী কাঠের তামাক চুল্লি। খাগড়াছড়িতে পাহাড় এবং গাছ পালার উপর ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য বর্তমান সরকারের উজ্জল ভাব মূর্তি ক্ষুন্ন হওয়া সমীচীন নয়।
প্রশাসনের হিসেব মতে এ বছর ৩৩টি ইটভাটা থাকলেও কখনো কখনো ৩৮ বা ৪০টির অধিক ইটভাটা ছিলো। গড়ে প্রতি বছর ৩০টি ইট ভাটা হিসেবে ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২০ বছরে ১৫ শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হয়েছে। অর্থাৎ দুই চিমনীর ইটভাটায় প্রতিবছর ৬০হাজার মন কাঠ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এক চিমনীর ইটভাটা আছে মাত্র কয়েকটি। সে হিসেবে গড়ে প্রতি ইটভাটায় ৫০হাজার মন কাঠ হিসাব করলে প্রতি ইটভাটায় প্রতিবছর রাজস্বের পরিমান ৫০০০০╳ ৫০=২৫,০০,০০০টাকা। প্রতি ইটভাটা থেকে প্রতিবছর রাজস্ব প্রাপ্তি ২৫ লক্ষ টাকা হলে গড়ে ৩০টি ইটভাটায়=২৫০০০০০╳ ৩০=৭,৫০,০০০০০ টাকা। প্রতি বছর ৩০টি ইটভাটার জ্বালানী ব্যবহার থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করতে পারে ৭কোটি ৫০লাখ টাকা। সেক্ষেত্রে বন বিভাগ অবৈধ কাঠ জব্দ করে ২০১৭-১৮ইং সালে প্রায় আড়াই কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। ২০০০ সাল থেকে বিগত বিশ বছরে সরকার ইটভাটার (জ্বালানী কাঠ) রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে ৭,৫০,০০,০০০╳২০=১৫,০০,০০০০০ টাকা। বিগত ২০ বছরে প্রশাসনের উদাসীনতা ও আইনের জটিলতার কারনে (জ্বালানী কাঠ বাবদ) সরকার ১৫ শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আইনে আছে ইটভাটায় জ্বালানী হিসেবে বনের কাঠ পুড়ানো যাবে না কিন্তু খাগড়াছড়ির সকল ইটভাটায় জ্বালানী হিসেবে বনের কাঠ অবৈধভাবে ব্যবহার করছে। কিন্তু জ্বালানী কাঠ ব্যবহারের জন্য ইটভাটা থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন রাজস্ব আদায় করছে না। ইটভাটা নিয়ন্ত্রনাধীন কর্তৃপক্ষ শুধু নাটক মঞ্চস্থ করছে। ইটভাটার বাৎসরিক কার্যক্রম শেষ হওয়ার কিছু সময় পূর্বে সমঝোতার মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে কয়েকটি ইটভাটায় ২০ বা ৩০ অথবা ৫০হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে সাড়ে ৭ কোটি টাকার রাজস্ব মওকুফ করে দিচ্ছেন !

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।

Back to top button