কাটছে না নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গোলাগুলির আতঙ্ক।

মোহাম্মদ ইউনুছ, নাইক্ষ্যংছড়ি: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে যেনো কাটছে না গোলাগুলির আতংক। এই ঠান্ডা,এই গরম এমন পরিস্থিতিতে বেকায়দায় পড়েছে সীমান্তের
জনসাধারণ,বিশেষ করে আমতলী, চেরার মাঠের ৪৩ সীমানা পিলার থেকে ফুলতলী ৫০ পিলার পযর্ন্ত গত শনিবারের উপর্যপুরী গুলি এবং মর্টারশেল বিস্ফোরণের ফলে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আছে এই সীমান্ত জনপদে বসবাসকারী জনসাধারণ।
আমতলির মোঃ করিম বলেন, সীমান্তে ঘেঁষা এই গ্রামে ছোট থেকে বড় হয়েছি, কিন্তু শনিবারের মত এমন ভীতিকর ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি কখনো। মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে আগে অনেক ফুটাফুটির আওয়াজ এসেছে কিন্তু শনিবারের আওয়াজ এর গতি এবং স্থায়িত্ব সময় ছিল কল্পনা বাইরে।
রোববার ২৩ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে চেরার মাঠ এলাকা দিয়ে ১১টা পযর্ন্ত থেমে থেমে ৪৪,৪৫ সিমানা পিলারের মাঝখান দিয়ে গোলাগুলির শব্দ মিয়ানমারের ভিতর থেকে বাংলাদেশের অনেক অভ্যন্তরে শোনা গেছে বলে সদর চেয়ারম্যান আবছার উদ্দিন জানিয়েছেন।
জামছড়ি ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ ছাবেরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের সময় জামছড়ি সীমানা পয়েন্ট হয়ে মিয়ানমার থেকে কয়েকটি ফায়ারের শব্দ তিনি শুনতে পেয়েছেন,তার এলাকা এখন সার্বিক বিবেচনায় বতর্মানে মোটামুটি ভালো আছে।
অপর দিকে ঘুমধুমের তমব্রুর ৩৪,৩৫ সীমানা পিলারের কাছাকাছি শনিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে মিয়ানমারের ভিতর থেকে একটি ফাইটার হেলিকপ্টার এসে তাদের ভিতরে কয়েকটি গোলা নিক্ষেপ করে প্রায় ১০মিনিট টহল দিয়ে আবারো মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলে যায় বলে তমব্রু বাজারের ব্যাবসায়ী সরোয়ার জানান।
সীমান্ত পরিস্থিতির বিষয় নিয়ে যোগাযোগ করা হলে,নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন,শনিবারে মিয়ানমারের ভিতরে চলা তুমুল সংঘর্ষের বিকট আওয়াজ এবং তাদের ছোঁড়া গুলি বাংলাদেশের অংশে এসে পড়াতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে সীমান্ত এলাকার স্পর্শকাতর জায়গা থেকে নিরাপদ আশ্রয় আনা প্রায় ত্রিশ পরিবারের মাঝে ১২ পরিবার ফিরে গেছেন তাদের নিজগৃহে অপর পরিবারগুলো এখনো তাদের নিকটবর্তী স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছে বলে তিনি জানান।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু, আমতলী, ফাত্রাঝিরি, হেডম্যানপাড়া এবং দৌছড়ি ও সদর ইউনিয়নের চেরার মাঠ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে মিয়ানমার বাহিনীর দুই মাস ধরে সংঘাত চলছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর ব্যবহৃত যুদ্ধ বিমান এবং ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে নিক্ষেপ করা গোলা এসে পড়ছে বাংলাদেশ সীমান্তে। মাঝেমধ্যেই মর্টার শেলের গোলা এবং ভারী অস্ত্রের গুলি এসে পড়ছে ঘুমধুম সীমান্তে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর উড়ে এসে পড়া মর্টার শেলের গোলা বিস্ফোরিত হয়ে শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গার মৃত্যু ও হয়।