এনবিআর তথ্য দিতে সময়ক্ষেপণ করলে বা তথ্য না দিলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে …….দুদক

ডেস্ক রিপোর্ট : দুদক থেকে যেকোনো করদাতার আয়-ব্যয় ও সম্পদের বিবরণী সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হলে তা দিতে বাধ্য থাকবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তথ্য দিতে সময়ক্ষেপণ করলে বা তথ্য না দিলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ক্ষেত্রে এনবিআর-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করতে পারবে। এতে শাস্তি হিসেবে প্রত্যেক্যের তিন বছরের জেল হবে বলে জানা যায়।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের বিধি সংশোধন করে নতুন এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তগুলো প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। এরই মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং শেষ হয়েছে বলে জানান দুদক ও এনবিআর কর্মকর্তারা। এনবিআর ও দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। নতুন বিধির বিরোধিতা করছে এনবিআর।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৩ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এনবিআর ও দুদকের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে এ বিষয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকরে দুদক জোরালো অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে এনবিআরের কর্মকর্তারা বৈঠকে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে করদাতা সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
দুদকের মহাপরিচালক (লিগ্যাল) মইদুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের ধরতে ২০০৪ সালে দুদক আইন করে। ২০০৭ সালে আইনটি উপযোগী করে কিছু বিধি সংশোধন করা হয়। আবারও নতুন বিধি যুক্ত করা হচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং শেষ হয়েছে। এখন প্রজ্ঞাপন আকারে জারির অপেক্ষায় আছে। যেকোনো সময়ে জারি করা হবে।’
নতুন নিয়মে এনবিআর কর্মকর্তাদের তিন বছরের জেলের বিধান প্রসঙ্গে মইদুল ইসলাম বলেন, নতুন বিধিতে দুদক থেকে তদন্তের প্রয়োজনে যেকোনো করদাতার আয়-ব্যয়, সম্পদ ও ব্যাংকিং লেনেদেনের তথ্য চাওয়া হলে এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দিতে বাধ্য থাকবেন। না দিলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে দুদক। তথ্য না দিলে শাস্তি হিসেবে এনবিআরের কর্মকর্তার তিন বছরের জেল হবে।
এত দিন কোনো করদাতার তথ্য চাওয়া হলে আয়কর অধ্যাদেশের ৮৪ ধারার ১ ও ২ উপধারা অনুযায়ী করদাতার গোপনীয়তা রক্ষার কথা বলে এনবিআর তথ্য দিত না। শুধু মামলা করার আগে তথ্য পেতাম। এতে তদন্ত দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে। তাই নতুন এ উদ্যোগ যোগ করে আগের বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এতে এনবিআরের কর্মকর্তারা আইনের মধ্যে এলেন।’
আইন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন, সদস্য কালীপদ হালদার, সদস্য কানন কুমারসহ এনবিআরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এনবিআর সূত্র জানায়, বৈঠকে এনবিআরের কর্মকর্তারা আইনটির বিরোধিতা করেন।
এনবিআরের সদস্য কানন কুমার যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ”করদাতার আয়-ব্যয় ও সম্পদের তথ্য দুদককে দেওয়া হলে করদাতা সংগ্রহে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দুদকের কাছে তথ্য চলে যাওয়ার ভয়ে করদাতারা আয়কর রিটার্ন এনবিআরে জমা দিতে চাইবে না। এ ছাড়া করদাতার তথ্য গোপন করার জন্য এনবিআরের কর্মকর্তার কেন জেল হবে”?
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দুদকের এ সিদ্ধান্তে করদাতা সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে এবং অর্থ অর্থপাচার বাড়বে।