একই বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পিতা-পুত্র-কন্যা ও নাতি

প্রতিনিধি : ‘শিক্ষার কোন বয়স নাই, চল সবাই পড়তে যাই’-পুরনো এই প্রবাদটি প্রমাণ করে দেখালেন খাগড়াছড়ি জেলার বাবা-ছেলে-মেয়ে ও নাতি। লেখাপড়ার যে কোনো বয়স নেই ৫০বছর বয়সে তা প্রমান করলেন মাটিরাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী আছলং ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা মো: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি তাইন্দং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি।
পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর বাবা-ছেলে-মেয়ের পাশের খবরে আনন্দের বন্যা বইছে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়িতে। প্রতিবেশী ও স্বজনরা অভিনন্দন জানাতে ছুটে আসেন তাদের বাড়িতে। স্বজনদের কেউ কেউ নিয়ে আসেন ফুল ও মিষ্টি। তাঁর বাড়িতে ভিড় করছেন প্রতিবেশীরা।
চলতি বছরের এইচএসসি ফলাফলে ৫০বছর বয়সে উচ্চ মাধ্যমিক(আলিম) পাস করেছেন মো: সিরাজুল ইসলাম। শুধু তাই নয় তার ছোট মেয়ে, একমাত্র ছেলে এবং বড় মেয়ের ঘরের নাতিও একই সাথে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
জানা যায়, সিরাজুল ইসলামের ছয় মেয়ে এক ছেলে। এবার পরীক্ষায় ছোট মেয়ে মাহমুদা সিরাজ খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.১৭পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। একমাত্র ছেলে হাফেজ নেসার উদ্দিন আহম্মেদ চট্টগ্রাম বাইতুশ শরফ কামিল মাদ্রাসা থেকে জিপিএ ৪ পেয়ে আলিম পাশ করেছে। সিরাজুল ইসলামের বড় মেয়ের ঘরের নাতি নাজমুল হাসান খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪.৬৭পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
তবে বড় চমকটুকু সিরাজুল ইসলাম নিজেই। তিনি সব ধরনের ভয়, সংকোচকে পেছনে ফেলে খাগড়াছড়ি ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ২.১৪পেয়ে সকলকে চমকে দিয়েছেন।
ছোট মেয়ে মাহমুদা সিরাজ বাবার এ সাফল্যে উচ্ছসিত। তিনি বলেন, ইচ্ছাশক্তি আর অধ্যবসায় যে সাফল্য এনে দিতে পারে তার অনন্য দৃষ্টান্ত আমার বাবা। আমাদের ভাই-বোনের ফলাফলের চেয়ে বাবার ফলাফলে আমরা গর্বিত।
এ বয়সে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে সিরাজুল বলেন, দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত শিক্ষার কিন্তু শেষ নেই। আমার আগ্রহ ছিল, আমাকে দেখে অন্যরাও উৎসাহ পাবে এ ভাবনা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।